অপতথ্যের কারণে পশ্চিমা দেশগুলোর মতো বাংলাদেশও ক্ষতির মধ্যে পড়ছে বলে দাবি করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন, অপতথ্য মানবসমাজকে বিরাট ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে এগুলো করা হচ্ছে। কিছুদিন আগে দাভোসে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ফোরামে যে আলোচনা হয়েছে, সেখানেও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
কিছুদিনের মধ্যে মানুষকে যে বিষয়গুলো সবচেয়ে ঝুঁকিতে ফেলবে, তার মধ্যে সবার আগে এই প্রোপাগান্ডা ও মিস-ইনফরমেশন। বিশ্বজুড়ে এই উদ্বেগটা আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের যেমন আছে, তেমনই আমাদেরও আছে।
সে ক্ষেত্রে আমরা কীভাবে পরস্পরকে সহায়তা করতে পারি, সেটা নিয়ে আলাপ হয়েছে। এছাড়া আমাদের অংশীদার হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তো আছেই। এগুলো ছাড়াও আরও বিভিন্ন স্তরে সহযোগিতা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি, যোগ করেন তিনি।
মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, ‘আজ মূলত আমরা ডিসইনফরমেশন ও মিসইনফরমেশন নিয়ে আলোচনা করেছি, কীভাবে ইনক্লুসিভ (অন্তর্ভুক্তিমূলক) একটি ব্যবস্থার মাধ্যমে এটার বিরুদ্ধে আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যেতে পারি।’
কী ধরনের সহযোগিতা পরস্পরকে করা হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আইডিয়া বিনিময় করা, প্রযুক্তিগত সহযোগিতা থাকবে। সমস্যা হচ্ছে, তারা এটার সমাধান করে ফেলেছে, তা-ও কিন্তু না। সমাধান কেউ করেনি। নতুন একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে, সেটা নিয়ে তারাও চিন্তা করছেন, আমরাও করছি। এখানে আমরা অংশীদার হচ্ছি। পরস্পরকে সহযোগিতা করে বৈশ্বিকভাবে আমরা এর একটা সুরাহা করতে পারি কি না; সেই আলাপ হয়েছে।’
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে কথা হয়েছে, সেটা কী, এমন প্রশ্নে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধ-বিগ্রহে সাংবাদিকদের ঝুঁকির মধ্যে পড়া, সেটা তো আছেই। বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে সেগুলো নিয়ে একটা আলাপ হয়েছে। ইউরোপেও বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ আছে বলে রাষ্ট্রদূত বলেছেন। আমাদের দেশেও কোথায় কোথায় আমরা ইমপ্রুভ করতে পারি, সেটা নিয়ে আলাপ হয়েছে।’
তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে ওপেন করে দেওয়া হয়েছে, গণমাধ্যমের বিস্তৃতি ঘটেছে। এই উদার করতে এমনও হয়েছে, গণমাধ্যমের মধ্যেও একটা ইনডিসিপ্লিন হয়ে গেছে। এটা আমরা বলছি না, গণমাধ্যমকর্মী আপনারাই বলছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘পেশাদার সাংবাদিকরাই বলছেন যে এটাকে রেগুলেশন, ডিসিপ্লিনে আনা দরকার। আপনারাই বলছেন একটু রেগুলেট করতে হবে। এগুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আমরা একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ চাই। গণতন্ত্র হচ্ছে আইনের শাসন। স্বাধীনতার নামে আমরা তো জঙ্গল বানিয়ে ফেলতে পারি না।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি আগেও বলেছি, অপতথ্য প্রতিরোধ করতে চাই, কিন্তু মতপ্রকাশের অবাধ স্বাধীনতাকে সঙ্কুচিত করে না। কাজেই দুটো একই সঙ্গে আমাদের করতে হবে। এ নিয়ে নৈতিকভাবে আমরা একমত আছি। অপতথ্যের কারণে পশ্চিমারা এবং আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত। আমাদের মধ্যে সেই আলাপই হয়েছে। পশ্চিমারা বিভিন্ন ধরনের আইন করছেন। সেই আইনের খসড়া, আইন প্রণয়নের বিষয়গুলো আমাদের শেয়ার করবেন।
নদী বন্দর/এসএকে