ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নভেল করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে তিনি টিকা নেন।
টিকা নেওয়ার পর প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ‘কিছু মানুষ অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাই নিবন্ধন করেই মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে টিকা নিয়েছি। সুন্দরভাবে টিকা প্রদান করা হয়েছে। কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’
এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নভেল করোনাভাইরাসের টিকা নেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বিএসএমএমইউর স্থাপিত বুথে নিজে এসে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে টিকা নেন পলক। মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের মধ্যে তিনিই প্রথম করোনাভাইরাসের টিকা নিলেন।
টিকা নেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে, সংসদ সদস্য হিসেবে আমি প্রথম টিকা গ্রহণ করে যারা সমালোচনা করছে, তাদের জবাব দিলাম।’
পলক আরো বলেন, ‘টিকা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার চলছে বলে সংসদ সদস্য ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সদস্য হিসেবে টিকা নিয়েছি।’
করোনা মহামারির শুরু থেকেই সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে পলক বলেন, ‘তারপরও এমপি-মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তারা টিকা নিচ্ছেন না—এমন তথ্য বিভিন্ন মহলে ছড়িয়ে মিথ্যা সমালোচনা হচ্ছে। এই সমালোচনা রুখতে আমি রাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা বলে এবং রেজিস্ট্রেশন করে টিকা নিয়েছি।’
এর আগে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে বিএসএমএমইউতে করোনাভাইরাসের টিকা প্রদান শুরু হয়। এরপর সেখানে প্রথম টিকাটি নেন বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।
টিকা নেওয়ার পর অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ‘টিকা নেওয়াটা আমার সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত দায়িত্ব। আমাকে দেখে মানুষ আস্থা পাবে, সাহস পাবে। এখানে আজ অনেক লোক জড়ো হয়েছেন। গতকাল (বুধবার) পর্যন্ত মানুষের মনে সংশয় ছিল টিকা নেবেন কি না। সংশয় কেটে যেতে শুরু করেছে। আমরা এটাই চাই।’
টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের বিপরীত পাশে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন সেন্টারে সুসজ্জিত ভবনে করোনার টিকাদান কেন্দ্রে চারটি বুথ সাজানো হয়েছে। টিকাদানের জন্য কয়েকটি শয্যাও বসানো হয়েছে। টিকাদান নিবন্ধনের জন্য বেশ ভিড়ও লক্ষ্য করা গেছে। করোনা ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পাঁচ হাসপাতালে টিকা দেওয়া হচ্ছে। এগুলো হলো—ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত-মৈত্রী জেনারেল হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল।
এর আগে গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে করোনার টিকা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঁচজনকে টিকা দেওয়া হয়। দেশে প্রথম করোনার টিকা নেন কুর্মিটোলা হাসপাতালের সেবিকা রুনু বেরুনিকা কস্তা।
এ ছাড়া গতকাল টিকা নিয়েছেন চিকিৎসক আহমেদ লুৎফুল মোবেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা, ট্রাফিক পুলিশের মতিঝিল বিভাগের কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম ইমরান হামিদ। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে গতকাল বিভিন্ন পেশার মোট ২৬ জনকে টিকা দেওয়া হয়।
করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
নদী বন্দর / জিকে