আগামী বছর হজ ব্যবস্থাপনায় অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আনা হবে বলে জানিয়েছেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
শনিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেসরকারি হজযাত্রী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। তবে কোন কোন বিষয়ে পরিবর্তন আনা হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যাতে মানুষ যৌক্তিক খরচে হজ পালন করতে পারে সেই বিষয়ে আমরা তৎপর রয়েছি। হজযাত্রীদের নিবন্ধন থেকে শুরু করে যে দাপ্তরিক প্রক্রিয়াগুলো রয়েছে, সেগুলো আরও কিভাবে সহজ করা যায়, হজযাত্রীদের আরেকটু বেশি কমফোর্ট দেওয়া যায়- সেই বিষয়ে আমরা কাজ করছি।
আগামী বছর হজ ব্যবস্থাপনায় আমরা অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারব বলে আশা করছি। আল্লাহ আমাদের এই আশা পূরণ করার তৌফিক দান করুন। সরকার হজযাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে বদ্ধপরিকর।’
মন্ত্রী বলেন, ‘হাশরের ময়দানে যা হবে হজ করতে গিয়ে মিনাতেও তাই হবে। কেউ কাউকে চিনবে না ওখানে। এ কথাটার উদ্দেশ্য হলো যে, আমি হজযাত্রী, আমি আল্লাহর মেহমান- এটুকুই যাতে পরিচয় থাকে, এর বাইরে যেন কারও পরিচয় না থাকে। আমি প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রী, সচিব, অমুক এই পরিচয়টা ওখানে থাকবে না। পরিচয় থাকবে আমি আল্লাহর মেহমান। এই মনোবৃত্তি নিয়ে যদি হজ করতে যান তবে প্রশান্তি নিজেও পাবেন, অন্য সবাই প্রশান্তি পাবে।’
‘ওখানে গিয়ে যদি বলা যায়, এ রুমে ৬ জন, ও কোত্থেকে আসলো। কে না কে, এই রুমের মধ্যে দিয়ে দিছে আমাদের সঙ্গে- তাইলে হবে ভাই? হজ করার মূল চিন্তা এবং চেতনা যেটি, সেটি এক জায়গায় গিয়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের সবাইকে ভাবতে হবে আমরা আল্লাহর মেহমান। সবাই এক, অদ্বিতীয় এবং অভিন্ন, সবার মধ্যে সেই হৃদ্যতা থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি কোন বংশের, কোন স্ট্যাটাসের সেটি সেখানে খাটানো ঠিক হবে না।’
ধর্মমন্ত্রী প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, হজের সময় কোন যান্ত্রিক কারণে যদি কোন অসুবিধা সৃষ্টি হয়, তখন আল্লাহকে ডাকতে হবে। কাউকে দোষারোপ করা যাবে না। কেউ চায় না হজ যাত্রী কষ্ট পাক, হজযাত্রার কোন কিছু অসুন্দর হোক, এটা কেউ কখনো কামনা করে না। সরকারও করে না, সরকারের যারা প্রতিনিধিত্ব করেন তারাও করে না, যারা সহযোগী তারাও করেন না, যারা এজেন্সি মালিক তারাও করেন না।
গত বছর একজন এজেন্সি মালিক হজযাত্রীদের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন জানিয়ে ফরিদুল হক খান বলেন, ‘এ বছরও একজন নিয়েছেন। এরকম যদি এজেন্সি মালিক হন সেটা ভিন্ন কথা। একজন এজেন্সি মালিক পলাতক থাকার পরেও গতবছর কোন হজযাত্রী থেকে যাননি। এবার যেটা হচ্ছে সেটাও আমরা করতে সক্ষম হব ইনশাল্লাহ।’
গত বছর মালিক পালিয়ে যাওয়ায় হজ এজেন্সিকে জরিমানা করা হয়েছে, জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এবং লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, জরিমানা করা হয়েছিল ৫০ লাখ টাকা। এখন এজেন্সি মালিকরা অনেক সচেতন হয়েছেন। এজেন্সি মালিকরা কোন অন্যায় করলে তাদের ওপর কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তারা অন্যায় করলে সেদিকে আমরাও লক্ষ্য রাখবো।
হজযাত্রীদের উদ্দেশ্যে ফরিদুল হক খান বলেন, ‘তাদের (এজেন্সি) ত্রুটি-বিচ্যুতি হতেই পারে। ছোটখাটো বিচ্যুতি, যেগুলো ক্ষমা করার যোগ্য, সেগুলো ক্ষমা করবেন। যেগুলো ক্ষমা করার যোগ্য না, সেগুলোর বিষয়ে কমপ্লেইন করবেন। ওখানে (সৌদি আরবে) আপনারা কমপ্লেন করতে পারবেন, দেশে এসেও কমপ্লেইন করতে পারবেন।’
এসময় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারসহ মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে চারদিনে ঢাকা থেকে নিবন্ধন করা ৩০ হাজার বেসরকারি হজযাত্রীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে।
নদী বন্দর/এসএইচ