পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এখন একটি অচল প্রতিষ্ঠানের নাম। এই প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নমূলক সকল কর্মকা- পড়েছে মুখ থুবড়ে। কোন সমন্বয় নেই। পদোন্নতিতে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন, বদলি, বিতর্কিত ব্যক্তিদের পদোন্নতি, জনবল সঙ্কট এখন প্রতিষ্ঠানটিকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দু’জন এডিজিসহ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কর্মকর্ত ডিজি বিদায় নেবেন। এ অবস্থায় কে হবেন নতুন মহাপরিচালক তা নিয়েই চলছে নানা গুঞ্জন। ইতোমধ্যেই অনেসককে বদলি করা হয়েছে। আবার দু’একজনকে জ্যেষ্ঠতা লংঘন করে পদোন্নতিও দেওয়া হয়েছে।বারবার জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এ ব্যাপারে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, মহাসচিব পদের ব্যাপারে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের দুই মন্ত্রী ও সচিবের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। সমন্বয়হীনতারকারণে পাউবোর বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ সঠিক সময়ে সম্পন্ন হচ্ছে না। এতে করে বিভিন্ন প্রকল্পে সময় বৃদ্ধির অনুমোদন দেয়া হচ্ছে।ফলে লাভবান হচ্ছে ঠিকাদাররা। আর বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রকল্প ব্যয়। এত করে সরকার লোকসানের কবলে পড়ছে।
এদিকে, ডিজি পদ ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরগুলোতেও জুনিয়রদের বসানো, দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দায়ের হওয়া ব্যক্তিদের ভাল জায়গায় বদলি এবং পদোন্নতি পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে পাউবোর মাঠ প্রশাসনে চলছে নানা ক্ষোভ।
জানা যায়, সমন্বয়হীনতা এতটাই প্রকট যে মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ পাউবো, ড্রেজার পরিদপ্তর, নদী গবষেণা ইনস্টটিউিট, যৌথ নদী কমশিন (জেআরসি), বাংলাদেশ হাওড় ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর সব প্রতিষ্ঠানেই চলছে বিশৃঙ্খলা। মাঠ প্রশাসন একবারেই অচল হয়ে পড়েছে।
বিশেষ করে পাউবো ও ড্রেজার পরিদপ্তর একেবারেই গতিহীন। এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়ম অনুযায়ী একজন কর্ণধার থাকলেও তারা স্বাধীনভাবে কোন কাজ করতে পারেন না। পানিসম্পদ মন্ত্রীর ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপরই নির্ভর করে তাদের সবকিছু। জনবলের ঘাটতি থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ দপ্তর ও পরিদপ্তরগুলোতে কোন নিয়োগ নেই। জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডে প্রায় ৮০ জন এ্যাসিট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার নেয়া হলেও তাদের ৬০ ভাগ চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে গেছেন। পাউবো’র পুরো কাজই এখন সিজিআইএস নামক প্রতিষ্ঠান নির্ভর। একই ধরণের অভিযোগ নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের।
এদিকে, গতকাল সোমবার পাউবো’তে প্রধান প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি সংক্রান্ত বৈঠক হয়েছে। এই পদোন্নতি নিয়েও গুঞ্জন চলছে। প্রশ্ন উঠেছে-এখানেও কী জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘণ হবে!
নদী বন্দর/এসএইচবি