২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পরেও অস্ট্রেলিয়া তাদের শুল্কমুক্ত বাজার প্রবেশাধিকার সুবিধা অব্যাহত রাখবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং-য়ের মধ্যে বৈঠকের পরে বুধবার (২২ মে) এক যৌথ বিবৃতিতে একথা জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বর্তমানে প্রায় ৪০০ কোটি ডলার, যা ১০ বছর আগেও ১০০ কোটি ডলারের কম ছিল। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য আরও গভীর ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে উভয় দেশ আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কৃষিজাত, প্রক্রিয়াজাত শিল্প, আইসিটি ও লজিস্টিক খাতে বিনিয়োগের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য কানেক্টিভিটির গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক অবকাঠামো কানেক্টিভিটি প্রোগ্রাম নিয়ে আলোচনা হয়। ওই প্রোগ্রামে বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্যরাও অংশীদার হতে আগ্রহী বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়।
সমৃদ্ধশালী ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া একসঙ্গে কাজ করবে। দুদেশই চায় শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল, সমৃদ্ধশালী, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ভয়-ভীতিহীন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল।
যৌথ বিবৃতিতে দুদেশের মধ্যে ইন্দো-প্যাসিফিক কেন্দ্রিক সহযোগিতা, বাণিজ্য বৃদ্ধি, দক্ষিণ এশিয়াতে কানেক্টিভিটি সম্প্রসারণ, সমুদ্র নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানব পাচার রোধসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।
বৈঠকে মিয়ানমারের সংঘাত পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর এর প্রভাব নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এই সংঘাত নিরসনে আসিয়ান ও অন্যান্য প্রধান আঞ্চলিক নেতাদের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া উভয় দেশই ভারত মহাসাগরের অংশ। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দুই দেশই এক অঞ্চল ও সমুদ্রের অংশ। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রের অখণ্ডতা এবং এই অঞ্চলে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মানবাধিকার, সমুদ্র ও আকাশপথে চলাচলে স্বাধীনতা, এবং শান্তিপূর্ণ বিবাদ মীমাংসার বিষয়ে দুই মন্ত্রী তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
গাজায় চলমান চরম অমানবিক পরিস্থিতি নিয়ে উভয়পক্ষ উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সেখানে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সমর্থন ব্যক্ত করেন।
আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্রের হাতে প্রতি বছর অনেক মানুষ মারা যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দুদেশ। অবৈধ ও অনিরাপদ মানব পাচার বন্ধের বিষয়ে নিরাপদ অভিবাসনের গুরুত্বকে উভয়পক্ষই স্বীকার করে নিয়েছে।
বিবৃতিতে জানানো হয়, অস্ট্রেলিয়া প্রস্তাব করেছে, তাদের কোস্টগার্ডের কমান্ডার এ বিষয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশ সফর করবেন।
নদী বন্দর/এসএইচ