বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে নদীর ভাঙন তীব্র হয়েছে। ভাঙনের কবলে পড়ে ঘরবাড়ি ও ফসল সরিয়ে নিচ্ছে স্থানীয়রা। হুমকিতে পড়েছে নদীর তীররক্ষা স্পারসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়ি ও ফসলী জমি।
সরেজমিন দেখা যায়, তিস্তা নদীতে তীব্র স্রোতে বইছে। স্রোতের তোড়ে পাড় ভেঙে যাচ্ছে। তীর রক্ষা স্পারের পাশে ফেলা জিওব্যাগ দেবে গেছে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের কালিরমেলা এলাকায় তিস্তার ভাঙনে নদী পাড়ের মানুষজন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তিস্তার পানি বাড়ায় এমন দৃশ্য রাজারহাটের ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখা, বুড়িরহাট ও উলিপুর উপজেলার বিভিন্ন ভাঙন কবলিত এলাকার।
ভাঙন কবলিতরা জানান, বার বার পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ জনপ্রতিনিধিদের জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রাজারহাটের কালিরমেলা এলাকার তিস্তাপাড়ের সিদ্দিকুল জানান, মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাত থেকে তিস্তার ভাঙনে তার ঘর নদীতে চলে গেছে। বাকি ঘর সরিয়ে নিচ্ছেন কিন্তু যাওযার জায়গা নেই।
একই এলাকার সুবাস জানান, বাড়ির গাছপালা, ঘর সব সরিয়ে নিচ্ছেন। না সরালে রাতেই সব সব নদীতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পানি উন্নযন বোর্ড গত বছর কিছু জিওব্যাগ ফেলেছিল কিন্তু সেগুলো পানির স্রোতে ভেসে গিয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম জানান, তিস্তার পানি বাড়ায় তার ইউনিয়নের অসংখ্য ঘরবাড়ি, ফসলী জমি নদীতে চলে গেছে। অনেকে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, গত একমাসে রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ও ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের তিস্তার ভাঙনে শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, তিস্তার ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশা তিস্তার স্থায়ী ভাঙন রোধে চলমান সমীক্ষা শেষ হলে কাজ করা হবে।
উজানের ঢল ও স্থানীয়ভাবে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে জেলার দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলা, ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানিও বেড়েছে।
নদী বন্দর/এসএইচ