টাঙ্গাইলে উজানের ঢল ও দফায় দফায় বৃষ্টি হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে চার উপজেলার ১১ হাজার পরিবারের ৪৪ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনা খাবারের সংকট। বন্যার্তরা জনপ্রতিনিধি ও সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর পানি ৩ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, ঝিনাই নদীর পানি ৩ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৯৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে ও ধলেশ্বরী নদীর পানি ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানির স্রোতে ভূঞাপুর, নাগরপুর ও বাসাইল উপজেলার অন্তত ৬টি কাঁচা পাকা সড়ক ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা, নিকরাইল, অর্জুনা ও গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কষ্টাপাড়া, ঘোষপাড়া, খানুরবাড়ী, ভালকুটিয়া এলাকায় দেখা গেছে, যমুনা নদীর পানি পাড় উপচে এইসব এলাকায় প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে মানুষজন। রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন এসব পানিবন্দি মানুষ। গত দুইদিন ধরে তারা পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
পানিবন্দি হেনা বেগম বলেন, বাড়িতে রান্নার করার জায়গাটুকু ফাঁকা নাই। সব জায়গায় পানি আর পানি। গতকাল অন্যের বাড়ির লোকজন খাবার দিয়েছিলো, তাই খেয়েছিলাম। আজ সকালে চিড়া খেলেও বিকেলে ভাত রান্না করতে না পারায় খেতে পারিনি।
মাহফুজ মিয়া বলেন, তিন দিন যাবত আমার মতো শত শত মানুষ পানিবন্দি। জনপ্রতিনিধি বা সরকারের পক্ষ থেকে কোন প্রকার সহযোগিতা পাইনি।
জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম বলেন, চার উপজেলার ১১ হাজার পরিবারের ৪৪ হাজার মানুষ পানিবন্দি। ভূঞাপুরে ৩০০, গোপালপুর ও কালিহাতীতে ১০০ প্যাকেট করে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়াও প্রতি উপজেলায় দুই হাজার করে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পর্যাপ্ত জিআর চাল ও অর্থ বরাদ্দের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। সোমবারের মধ্যে তা বরাদ্দ পাওয়া যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, সার্বক্ষণিক বন্যার খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। বন্যা কবলিতদের যথাযথ সাপর্ট দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি রয়েছে।
নদী বন্দর/এসএইচ