মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ ওমানের রাজধানী মাস্কাটে এক শিয়া মসজিদে বন্দুক হামলা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় ঘটা এই হামলায় নিহত হয়েছেন ৯ জন এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৮ জন। আহতদের মধ্যে ওমানসহ বিভিন্ন দেশেল নাগরিকরা রয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে ৪ জন পাকিস্তান, একজন ভারতীয় এবং ওমান পুলিশের একজন কর্মকর্তা রয়েছেন। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
প্রত্যক্ষ্যদর্শী, স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এবং মাস্কাট পুলিশের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, সোমাবার মাস্কাটের ওয়াদি আল কবির এলাকার আলী বিন আবি তালিব মসজিদে সোমবার এশার নামাজ চলাকালে হঠাৎ এলোপাতাড়ি গোলাগুলি শুরু হয়।
ওমানে গতকাল মঙ্গলবার ছিল ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের বিশেষ দিন আশুরা। ৬৮০ খ্রিস্টাব্দে আরবি মহররম মাসের ১০ তারিখে কারবালা যুদ্ধের ময়দানে শহীদ হয়েছিলেন ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুহম্মদ (স.)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসেন (র.)।
শিয়া মতাবলম্বী মুসলিমরা বিভিন্ন ধর্মীয় আচারের মাধ্যমে এই দিনটিকে স্মরণ করেন। সুন্নি ও ইবাদি মুসলিম অধ্যুষিত ওমানের সংখ্যালঘু শিয়া মুসলিমদের সবচেয়ে বড় উপাসনালয় মাস্কাটের আলী বিন আবি তালিব মসজিদ। আশুরার আগের রাত হওয়ায় মঙ্গলবার এশার নামাজের সময় আলী বিন আবি তালিব মসজিদে মুসল্লিদের সমাগম বেশি ছিল।
গুলি শুরু হওয়ার পর উপস্থিত মুসল্লিরা হুড়োহুড়ি করে মসজিদ থেকে বের হতে থাকেন। আহতদের কয়েকজন এ সময় পদদলনের শিকার হয়েছেন।
সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত মসজিদটিতে পুলিশ এবং আইএসের বন্দুকধারীদের গুলি-পাল্টা গুলি বিনিময় চলে। এ সময় আইএসের তিন হামলাকারী নিহত হন।
এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ওমানের সরকারের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য-বিবৃতি দেওয়া হয়নি, তবে দেশটিতে নিয়োজিত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত ইমরান আলী হাসপাতালে হতাহতদের পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এটা খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনা। ওমানের ইতিহাসে এমন ঘটনা কখনও ঘটেছে বলে আমাদের জানা নেই।’
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে হামলার ভিডিও পোস্ট করে আইএস বলেছে, তাদের ‘সুইসাইড’ স্কোয়াডের তিন সদস্য এই হামলা চালিয়েছিল।
সূত্র : রয়টার্স
নদী বন্দর/এসএইচ