ভারতের পেট্রাপোল স্থলবন্দরে ‘জীবন জীবিকা বাঁচাও’ কমিটির ৫ দফা দাবির মধ্যে ২ দফা বাস্তবায়িত হওয়ায় গতকাল সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলকারীরা।
আজ মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি পুনরায় সচল হয়েছে। আগের দিন সোমবার (১ ফেব্রুয়ারী) সকাল থেকে ওপারের প্রশাসনের সঙ্গে বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের মধ্যে সন্তোষজনক আলোচনা শেষে আমদানি-রপ্তানি সচল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর ফলে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে উভয় বন্দরে।
এর আগে পেট্রাপোল স্থলবন্দরে ‘জীবন জীবিকা বাঁচাও’ কমিটি ৫ দফা দাবি আদায়ে রবিবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল থেকে এ পথে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। রবিবার ভারতে সরকারি ছুটি থাকায় কোনো আলোচনা হয়নি।
সোমবার সকাল থেকে দফায় দফায় আলোচনার পর সন্ধ্যায় তাদের দাবির মধ্যে ২০ ফেব্রুয়ারী থেকে পেট্রাপোল চেকপোস্টে হ্যান্ড লাগেজ কুলিরা কাজ করতে পারবে আর পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরে রেখে ট্রাকচালকরা পারমিটের মাধ্যমে পায়ে হেঁটে এপার-ওপার যাতায়াত করতে পারবে। বাকি তিনটি দাবি পর্যায়ক্রমে আলোচনা করে বাস্তবায়ন করা হবে এমন আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন বলে জানান, ভারতের পেট্রাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শশঙ্ক শেখর ভট্টাচার্য।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আজ মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে পূর্বের ন্যায় আমদানি-রপ্তানি চলছে। তারা প্রশাসনের আশ্বাসে আবারো কাজে ফিরে এসেছেন। বিষয়টি সকল সদস্যদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রায় ৫ শতাধিক ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি ও দেড় শতাধিক ট্রাকে বিভিন্ন পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়ে থাকে। বাণিজ্যিক কার্যক্রম সম্পাদনে ভারতীয় ট্রাক চালক ও সহকারীরা বেনাপোল বন্দরে গাড়ি রেখে পাসের মাধ্যমে আসা-যাওয়া করতেন। বন্দর শ্রমিকেরা কাজ করতেন পাসপোর্টযাত্রীদের ব্যাগ বহন কাজে। কিন্তু ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সম্প্রতি নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে তাদের চেকপোস্ট ও বন্দর এলাকায় যাতায়াত বন্ধ করে দেয়।
এছাড়া বিএসএফের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া ট্রাক তল্লাশিতে দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ হয়। এসব সমস্যা সমাধানে আন্তরিক হতে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে সংগঠনটি। কিন্তু কোনো সমাধান না আসায় বাধ্য হয়ে বন্দর জীবন-জীবিকা বাঁচাও সংগঠনটি কর্মবিরতি পালন করে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে আমদানি-রপ্তানি সমিতি, ট্রাকচালক, বন্দর শ্রমিক ও বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা।
এদিকে, দুই দেশের বন্দরে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়ে আছে। দুই দিন বন্ধ থাকার পর আমদানি-রপ্তানি চালু হলে ট্রাক ও পণ্যজটে পড়বে গোটা বন্দর এলাকা।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, দুই দিন বন্ধ থাকার পর আজ সকাল থেকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যানজট ও পণ্যজট নিরসনে দ্রত পণ্য খালাসের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
নদী বন্দর / জিকে