‘শিল্পের আলোয় ভরে উঠুক মঞ্চের আঙিনা, দর্শকই স্বজন, দর্শকই প্রেরণা’— এমন প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ শনিবার বিকেল ৫টায় মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব শুরুর কথা থাকলেও হুমকির মুখে উৎসবটি স্থগিত করা হয়েছে। রমনা থানা থেকে ফোনে নাট্যোৎসব বন্ধ করতে বলা হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ মহিলা সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
এরপর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুরো ঘটনা নিয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন ঢাকা মহানগর নাট্য পর্ষদের আহ্বায়ক ঠাণ্ডু রায়হান।
মহানগর নাট্য পর্ষদ বলছে, বাংলাদেশের থিয়েটার আজ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে।
কথা ছিল, শত দর্শক ও নাট্যকর্মী আজ যৌথভাবে ১৪ দিনব্যাপী ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব ২০২৫ উদ্বোধন করবেন। এ উপলক্ষে গত দুই মাস ঢাকার ৮৫টি নাট্যদলের কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে, গণ-অর্থায়নে যখন উৎসবের সব আয়োজন সম্পন্ন করেছেন, ঠিক তখন আমাদের জানানো হলো, উৎসব বন্ধ করতে হবে।
গতকাল দুপুর ১টার সময় বাংলাদেশ মহিলা সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমাদের জানান যে রমনা থানা থেকে ফোনে নাট্যোৎসব বন্ধ করতে বলা হয়েছে। আমরা উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করি।
সন্ধ্যায় আমরা ওসি সাহেবের সঙ্গে আমরা তার অফিসে সাক্ষাৎ করি এবং উৎসবের বিস্তারিত তথ্য তাকে অবহিত করি; যদিও এ ধরনের আয়োজনের জন্য পুলিশ বা সরকারের কোনো অনুমতির নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। আলোচনার পর ওসি সাহেব আমাদের আশ্বস্ত করেন এবং আমরা নিরাপত্তা সহযোগিতা চেয়ে একটি আবেদনপত্র জমা দিয়ে চলে আসি।
সেখানে আরো বলা হয়েছে, থানায় নিরাপত্তা সহযোগিতা চেয়ে আবেদনপত্র জমা দিয়ে আসার কিছুক্ষণ পর একটি মব থানার মধ্যে ঢুকে একরকম হুমকির স্বরে গালাগালসহ মহিলা সমিতির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে উৎসব বন্ধ করার জন্য চাপ দেয়। এমন পরিস্থিতিতে মহিলা সমিতির কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তার কথা ভেবে রাতেই মৌখিকভাবে আমাদের হল বরাদ্দ বাতিল করে।
এরপর জানানো হয়, গতকাল শুক্রবার রাতে কে বা কারা অন্ধকারে মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহীম মিলনায়তন থেকে উৎসবের সাজসজ্জা খুলে নিয়ে যায়। এরপরও নাটকের স্বার্থে আমরা ওসির সাথে আলোচনা করি। এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে সবার নিরাপত্তার কথা ভেবে আমাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ও ভালোবাসায় আয়োজন করা প্রাণের নাট্যোৎসব আপাতত স্থগিত ঘোষণা করতে বাধ্য হচ্ছি।
পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ রানার সঙ্গে কথা হলে এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান গণমাধ্যমকে।
নদীবন্দর/জেএস