সম্প্রতি ফেসবুকে দেওয়া একটি স্ট্যাটাসে ‘তৌহিদী জনতা’ লেখার কারণে দুঃখপ্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ভোরে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস দিয়ে এই দুঃখপ্রকাশ করেন মাহফুজ।
স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, আমার কোনো কোনো বক্তব্য হয়ত কারও কারও মনে কষ্ট দিয়েছে, বিশেষ করে তৌহিদী জনতা বলাটা। আপনারা যারা আমার বক্তব্যের কারণে নারাজ-নাখোশ হয়েছেন, আমি আপনাদের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করছি।
এছাড়া গত কয়েক মাসে অন্য কোনো বক্তব্যে কেউ আঘাত পেলে বা সেটাকে বিভাজনমূলক ভাবলে, সে ক্ষেত্রেও আমি আমার বক্তব্য পুনর্বিবেচনার পক্ষে। ভারসাম্যপূর্ণ, বিভাজন ও ট্যাগিংবিরোধী অবস্থান গ্রহণ করাটা জনগণের মধ্যকার ঐক্যের জন্য জরুরি। আমরা জালিম বা মজলুম কোনোটাই হতে চাই না।
উপদেষ্টা মাহফুজ আরও লেখেন, এ অভ্যুত্থান সবার। সেজন্যই মাস্টারমাইন্ড নামক মিডিয়ার তৈরি হাইপকে আমি শুরুতেই প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা সিদ্ধান্ত যারা নিতাম, তারা প্রায় সব সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে অনেক স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলেছি। একটা সিদ্ধান্ত ফাইনালাইজ করতে অন্তত ৫/৬ টা গ্রুপের মতামত শুনে বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে হইয়ে।
ফলে এটা আসলে আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া বডির সামষ্টিক কৌশলগত সক্ষমতা যেমন, তেমনি অনেকগুলো গ্রুপ অব পিপলের অংশগ্রহণ ও পরামর্শেরও ফসল। কেউই অনুল্লেখযোগ্য নন। আর জনগণতো ১৯-৩৩ জুলাই কারও সিদ্ধান্তের জন্য বসে থাকেনি। তবে তারা অবশ্যই পাবলিক- প্রাইভেট থেকে শুরু করে মাদরাসা-স্কুল-কলেজের ছাত্রদেরই লেজিটিমেট নেতৃত্ব হিসেবে মানতেন।
মধ্যবর্তী অবস্থান ধরে রাখতে হবে উল্লেখ করে মাহফুজ আরও লেখেন-আমাদের মধ্যবর্তী অবস্থান ধরে রাখতে হবে। সবাইকে নিয়ে এগোতে হবে, কিন্তু ‘স্যাবোটিয়ার’দের বাদ দিয়ে। পেছন থেকে ছুরি মারা, অনার কোড না মানার অভ্যাস-এসব যে কোনো বন্দোবস্তের জন্য হুমকিস্বরূপ। রাজনীতি মানে Gentlemen’s Agreement ও থাকবে না এটা যারা ভাবেন, তারা নিজেদের শুধরে নিন।
স্ট্যাটাসে তিনি আরও লেখেন, আমাদের শত্রু অগণিত এবং তারা সবাই শক্তিধর। মিত্র খুবই কম। একটু ছাড় দিয়ে যদি আমরা মিত্রতা বাড়াতে পারি এবং শত্রুদের পরাস্ত করতে পারি তা আখেরে এ দেশের জনগণকেই উপকৃত করবে।
গণ-অভ্যুত্থানের সব শক্তির ঐক্যই আমাদের গন্তব্য। একটা হিস্টরিক ব্লক তৈরির সম্ভাবনা আমাদের সামনে ছিল। এখনো আছে বটে। ফ্যাসিবাদবিরোধী ও বাংলাদেশপন্থি জনগোষ্ঠীকে নিজেদের মধ্যেই রাজনৈতিকভাবে ইতিবাচক প্রতিযোগিতা করতে হবে। কোনোভাবেই ফ্যাসিবাদী শক্তিকে রাজনীতিতে স্পেইস দেওয়া যাবে না।
নদী বন্দর/এসএইচ