1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
বাংলাদেশ ছিল অনেকটা বিধ্বস্ত গাজার মতো: ড. ইউনূস - Nadibandar.com
মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ০৭:৪১ অপরাহ্ন
নদী বন্দর ঢাকা:
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫
  • ১ বার পঠিত

গত বছরের আগস্টে ড. মুহাম্মদ ইউনূস যখন বাংলাদেশে ফেরেন তখন তাকে মন খারাপ করা গল্পগুলোর মধ্য দিয়েই স্বাগত জানানো হয়। রাস্তাঘাট ছিল তখনও রক্তে ভেজা ছিল। পুলিশের ছোড়া বুলেটে নিহত এক হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারী ও শিশুর লাশ তখনও মর্গে স্তূপ করে রাখা ছিল।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে সেদিন শেখ হাসিনার ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান ঘটে। তার নৃশংসতার প্রতিশোধ নিতে বেসামরিক লোকজন তখন তার বাসভবনের দিকে ছুটে যান। কিন্তু এরই মধ্যে দেশ ছেড়ে হেলিকপ্টারে চড়ে ভারতে পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

৮৪ বছর বয়সী ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন অর্থনীতিবিদ যিনি দরিদ্রদের ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের পথিকৃৎ হিসেবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। অনেক আগেই তিনি রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করেছিলেন।

হাসিনার সরকারের আমলে বছরের পর বছর ধরে তাকে নানা ধরনের হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। মূলত স্বৈরশাসক হাসিনা ড. ইউনূসকে নিজের রাজনৈতিক হুমকি হিসেবেই দেখেছেন। ড. ইউনূসের জীবনের বেশিরভাগ সময় দেশের বাইরেই কেটেছে।

কিন্তু যখন ছাত্র-জনতা তাকে বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিতে বলেন তখন তিনি রাজি হন।

দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) দেশের যে ক্ষতি করেছেন তা ছিল নজিরবিহীন। ড. ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার সময় বাংলাদেশের অবস্থা বর্ণনা করে গার্ডিয়ানকে বলেন, এটি ছিল সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত একটি দেশ অনেকটা গাজার মতো। ভবনগুলো ধ্বংস করা না হলেও পুরো প্রতিষ্ঠান, নীতি, মানুষ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সবকিছু ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনার শাসনামল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, হাসিনার শাসনামলে কোনো সরকার ছিল না, ছিল একটি দস্যু পারিবারিক শাসন। সরকারপ্রধানের যেকোনো আদেশই তখন পালিত হতো। হাসিনার আমলে দুর্নীতির মাত্রা এত বেশি ছিল যে এতে ব্যাংকিং খাত এবং অর্থনীতি ধসে পড়েছে।

আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়া হাসিনার আত্মীয়দের মধ্যে তার বোনের মেয়ে যুক্তরাজ্যের সাবেক লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকও ছিলেন। হাসিনার শাসনামলের সঙ্গে জড়িত সম্পদের বিষয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার পর এবং বাংলাদেশে দুর্নীতির তদন্তে নাম আসার পর টিউলিপ সিদ্দিককে বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করতে হয়। যদিও তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

গার্ডিয়ানকে দেওয়া সাক্ষাতকারে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘ডিলমেকার’ হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বর্তমান মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি অনেক কঠোর হওয়া সত্ত্বেও ড. ইউনূস বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে দেখার জন্য ট্রাম্পকে অনুরোধ করেছেন।

ড. ইউনূস ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আসুন, আমাদের সঙ্গে ডিল (চুক্তি) করুন। তিনি স্বীকার করেন যে ট্রাম্পের প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তবে তিনি দৃঢ়ভাবে জানান, সম্পর্ক ‍উন্নয়নের গণতান্ত্রিক এই প্রক্রিয়া থেমে থাকবে না।

ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইউএসএআইডি তহবিল কাটছাঁট করেছে এবং বাংলাদেশের ওপর বিনা প্রমাণে অভিযোগ এনেছে যে, তারা সাহায্যের অর্থ ‘চরম বামপন্থি কমিউনিস্ট’ নির্বাচনে ব্যবহার করেছে। এর ফলে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো ঝুঁকির মুখে পড়েছে এবং ড. ইউনূসের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনার প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় ড. ইউনূস ট্রাম্পের সঙ্গে ইলন মাস্কের জোটকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। তিনি এই বিলিয়নিয়ারকে বাংলাদেশে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা চালুর জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

এপ্রিল মাসে মাস্কের বাংলাদেশ সফরের সম্ভাবনা রয়েছে, যা বাংলাদেশের অবকাঠামো আধুনিকীকরণের পাশাপাশি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নদীবন্দর/এসএইচ

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com