এখনই পানি প্রবাহিত হচ্ছে না তিস্তায়। অথচ খরার ভর মৌসুম আসতে এখনও ঢের বাকি। এ অবস্থায় সেচনির্ভর বোরোর আবাদ নিয়ে চরম দুর্ভাবনায় এ অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষক। এই পরিস্থিতিতে আবার সামনে এসেছে ভারতের সঙ্গে পানিবণ্টন চুক্তি আর চীন প্রস্তাবিত সমন্বিত তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি।
বিশাল বিরান ধু ধু মরুর বুকে দাঁড়িয়ে আছে তিস্তা ব্যারেজ। ৩ লাখ কিউসেক পানি নিঃসরণ ক্ষমতাসম্পন্ন এই ব্যারেজ দিয়ে এক ফোঁটা পানিও প্রবাহিত হচ্ছে না এখন। দেশের সবচে বড় এই তিস্তা সেচ প্রকল্পের এক লাখ ১১ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দিতে শুষ্ক মৌসুমে ১০ হাজার কিউসেক আর ক্ষীণ ধারায় হলেও নদীর প্রবাহ ধরে রাখতে আরও ৪ হাজার কিউসেক পানি দরকার।
নীলফামারী ডালিয়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, গত বছর আমরা ৫০ হেক্টর জমিতে পানি দিতে পেরেছিলাম। চলতি বছর টার্গেট করেছে ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে পানি দেওয়া হবে।
এই পরিস্থিতিতে আবার সামনে এসেছে দশকের পর দশক ধরে ঝুলে থাকা ভারতের সঙ্গে তিস্তা চুক্তির ইস্যুটি। এসেছে চীন প্রস্তাবিত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের তাগিদ।
তিস্তা বাঁচাও-নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন, নদীর পানিকে ঠিক রাখার জন্য, ভাঙন রোধে যে মহাপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে সেটি শুরু করার দাবি জানাচ্ছি।
দুই বছরের সমীক্ষা শেষে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার ঋণ সহায়তাসহ চীনের প্রস্তাবিত প্রকল্প শিগগিরই শুরু করার আশা পানি উন্নয়ন বোর্ডের।
উত্তরাঞ্চল পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী জ্যোতি প্রকাশ ঘোষ বলেন, এটি হলে আবাসিক প্রকল্প এবং কমার্শিয়াল জোন এবং কৃষি জমি অনেক উদ্ধার হবে। এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে।
বাংলাদেশে তিস্তা নদীর পুরো ১৩০ কিলোমিটার অংশে ব্যাপক খনন করে রিজার্ভার তৈরি, দুই তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে ভাঙন রোধ ও জমি উদ্ধার করে অর্থনৈতিক জোন, স্যাটেলাইট টাউন তৈরিসহ প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক কৃষিব্যবস্থা গড়তে একটি প্রকল্প প্রস্তাব সরকারের কাছে দিয়েছে একটি চীনা প্রতিষ্ঠান।
নদী বন্দর / এমকে