রমজান মাসে কিছুটা স্বস্তিতে থাকলেও ঈদ শেষে সবজির বাজারে হঠাৎ আগুন লেগেছে। প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে রাজধানীর বাজারগুলোতে ৭০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন ক্রেতারা। অনেকেই বিক্রেতাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়া, সাইনবোর্ডসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে জানা যায়, আজ প্রতি কেজি করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পটল ৭০ থেকে ৮৫ টাকা, কাঁকরোল ৭০ টাকা, ঝিঙ্গা ৯০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, কচুর লতি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৬০ টাকা, সজনা প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১২০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৮০ টাকা, দেশি রসুন ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, আদা ১৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া কাঁচামরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
যাত্রাবাড়ী আড়তে বাজার করতে আসা এক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়ে গেছে সবজির দাম। রমজানে বাজার মনিটরিংয়ের কারণে ন্যায্যদামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে বিক্রেতারা। এখন আবার লাগামহীন হয়ে পড়েছে।
কাজলা থেকে আসা কাজল নামে একজন বলেন, ‘একেক সময় একেক অজুহাতে নিত্যপণ্য ও সবজির দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন বিক্রেতারা। এতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে সবকিছু।’
সাইনবোর্ড এলাকা থেকে মাছ ও সবজি কিনতে যাত্রাবাড়ী আড়তে এসেছেন জ্যোৎস্না আহমেদ। তিনি দুই ধরনের মাছ ও কুমড়া, ঢেঁড়স, আলু, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, শাক, কাঁচামরিচ কেনেন।
জ্যোৎস্না আহমেদ জানান, ‘রমজানজুড়ে সবজি ও নিত্যপণ্যের দামে একপ্রকার স্বস্তি থাকলেও এখন আবার সবকিছুর দাম চড়া।’
রাজধানীর শনিরআখড়া এলাকায় বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ঈদের পর থেকেই সব ধরনের সবজির দাম বেড়ে গেছে। এখন বাজারে সত্তর-আশি টাকার নিচে ভালো সবজি পাওয়া যায় না। তবে চলতি বছরের রমজান মাসে সস্তায় সবজি কিনতে পেরেছি।’
সবজির দাম বাড়ার কারণ সম্পর্কে যাত্রাবাড়ী আড়তের সবজি বিক্রেতা সবুজ আলম বলেন, ‘ঈদের পর পরিবহন সংকটের কারণে কৃষকরা ঠিকমতো সবজি পাঠাতে পারেনি। ফলে রাজধানীতে সবজির সরবরাহ ঘাটতি ছিল। এতে করে বাড়তি দামে মাল কিনতে হয়েছে। তাছাড়া এখন মৌসুম শেষের দিকে, সে কারণেও সরবরাহ কম। ফলে সবজির দাম বেড়েছে।’
এদিকে সবজির বাজার লাগামহীন হলেও অপরিবর্তিত আছে মাছ-মাংসের দাম। যদিও ঈদের আগে মাংসের দাম কোনো কোনো এলাকায় কিছুটা বেড়েছিল।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শুক্রবার প্রতি কেজি ইলিশ মাছ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। রুই মাছ ৩৫০-৪০০ টাকা, পাঙাশ ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০-২৬০, কাচকি ৫০০, কৈ ২০০-২৪০, চিংড়ি ৭০০-৮০০ টাকা, দেশি টেংরা ৮০০ ও পাবদা মাছ ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া গরুর মাংসের কেজি ৭৫০-৭৮০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১১৫০ টাকা কেজি দরে।
নদীবন্দর/জেএস