সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করা জুলাই আন্দোলনে নিহত জসিম উদ্দিনের মেয়ে লামিয়ার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার (২৭ এপ্রিল) সকালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।
সকালে ময়নাতদন্ত শেষে মৃতের চাচা মনিরুল ইসলামের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
মরদেহ হস্তান্তরের দাায়িত্বে থাকা আদাবর থানার সাব-ইন্সপেক্টর মনিরুজ্জামান এ তথ্য জানিয়েছেন।
ময়নাতদন্তের পর লামিয়ার মরদেহ আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে মরদেহের বাকি আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হবে। এরপর তার মরদেহ পটুয়াখালীতে তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে, যেখানে তাকে সমাহিত করা হবে।
লামিয়ার পরিবার এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার দাবি করেছে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে। এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনার পেছনে যারা দায়ী, তাদের বিচার এবং শাস্তি নিশ্চিত করতে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ এবং প্রতিবাদের সৃষ্টি হয়েছে।
কলেজের পরীক্ষা দেয়ার জন্য রোববার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে মায়ের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল লামিয়ার। সেজন্য আগের দিন শনিবার মার্কেট থেকে কিছু কেনাকাটাও করেন। রাত ৮টার দিকে মা রুমা বেগম ছোট মেয়েকে নিয়ে বাসার পাশেই মাদরাসায় যান। সেই সুযোগে রাত ৯টার দিকে রুমের ভেতর গলায় ফাঁস দেন জুলাই আন্দোলনে শহিদ জসিম উদ্দিনের ১৭ বছরের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে লামিয়া। টের পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেয়ার পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাঙ্গাসিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে শহিদ জসীম উদ্দিনের মেয়ে তার বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ি পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে যাচ্ছিলেন। পথে নলদোয়ানী থেকে অভিযুক্তরা পিছু নেয়। হঠাৎ পেছন থেকে মুখ চেপে ধরে পার্শ্ববর্তী জলিল মুন্সির বাগানে নিয়ে যায় সাকিব ও সিফাত। একপর্যায়ে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এমনকি তার নগ্ন ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা।
মামলার পর আসামি সাকিব ও সিফাতকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে দুমকি থানা পুলিশ। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। তবে মামলা হওয়ার পর আসামিদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন হুমকি দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ পরিবারের।
নদীবন্দর/জেএস