ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতায় একটি হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন। এতে দগ্ধ হয়েছেন আরও অনেকেই।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে কলকাতার বড়বাজারে ফলপট্টির ঋতুরাজ হোটেলে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর এনডিটিভির।
প্রবল ধোঁয়ার জেরে হোটেলটি কার্যত ‘গ্যাসচেম্বার’-এ পরিণত হয়। যার ফলে হোটেলের ভেতরে ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা ঢুকতে পারছিলেন না। তারা মই দিয়ে চার ও পাঁচ তলার ঘরের জানলা ভেঙে হোটেলে প্রবেশ করেন। হোটেলে যারা আটকে ছিলেন তাদের মধ্যে অনেকেই প্রবল ধোঁয়ার কারণে শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন।
ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিটের প্রায় ৮ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও ভোর চারটা পর্যন্ত তা পুরোপুরি নেভানো যায়নি।
ঋতুরাজ হোটেলটি যেখানে অবস্থিত সেখানে যেতে হয় সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ এবং বিধান সরণির সংযোগকারী রাস্তা দিয়ে, যেটি বেশ ঘিঞ্জি। যে হোটেলে আগুন লেগেছে তার আশপাশে প্রচুর দোকান ও বাড়ি রয়েছে। ফলে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল। ঘটনাস্থলে ভোর তিনটা পর্যন্ত মেয়র ফিরহাদ হাকিম, কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা এবং রাজ্যের নারী এবং শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা ছিলেন ।
কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ১৪ জনের লাশ এবং বেশ কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তের জন্য একটি বিশেষ দলও গঠন করা হয়েছে। আগুন লাগার কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আগুনের ঘটনার পরপরই রাজ্য প্রশাসনকে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারের জন্য অনুরোধ করেন। ভবিষ্যতে এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা রোধ করতে তিনি অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থার কঠোর নজরদারি করার আহ্বান জানান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমি রাজ্য প্রশাসনের কাছে ক্ষতিগ্রস্তদের অবিলম্বে উদ্ধার, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও মানবিক সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানান। এছাড়াও, ভবিষ্যতে এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা রোধ করার জন্য অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা এবং কঠোর পর্যবেক্ষণের আবেদন করেন।
ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারও কলকাতা করপোরেশনের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, এটি একটি মর্মান্তিক ঘটনা। কোনো নিরাপত্তা বা সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল না। আমি জানি না করপোরেশন কী করছে।
নদীবন্দর/জেএস