দেশজুড়ে দীর্ঘদিন ধরে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের মাঝে কিছুটা স্বস্তির খবর দিল আবহাওয়া অধিদফতর। রোববার (১১ মে) দেশের বেশিরভাগ এলাকায় গরম অনুভূত হলেও, কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। আগামীকাল সোমবার থেকে দেশের উত্তর ও উত্তর–পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, আর মঙ্গলবার থেকে তা আরও বিস্তৃত হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় আজ সকাল থেকেই প্রচণ্ড গরম অনুভূত হয়েছে। সকাল ৯টার দিকে ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ২৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, আজকের আবহাওয়াও গতকালের মতোই থাকতে পারে, তবে কিছু এলাকায় তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, গতকাল শনিবার দেশের ৬২টি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে, যা আগের দিনের তুলনায় বিস্তৃত ছিল। চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা—৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর রাজধানী ঢাকায়ও তাপমাত্রা পৌঁছায় ৪০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা এ বছরের ঢাকার সর্বোচ্চ।
দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টি না হওয়া, দক্ষিণ দিক থেকে জলীয় বাষ্প কম আসা, বাতাসের গতি কমে যাওয়া এবং সূর্যের তীব্রতা—এই সব কারণে চলমান তাপপ্রবাহ আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এর প্রভাবে ডায়রিয়া, হিটস্ট্রোকসহ গরমজনিত রোগবালাই বেড়ে গেছে।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক জানান, আগামীকাল সোমবার রংপুর, ময়মনসিংহ এবং সিলেটের কিছু কিছু এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে। তবে মঙ্গলবার থেকে দেশের আরও বিস্তৃত অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, যা কিছুটা স্বস্তি নিয়ে আসতে পারে।
গতকাল অন্তত ৭টি জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। এর আগের দিন অর্থাৎ শুক্রবার তীব্র তাপপ্রবাহ সীমাবদ্ধ ছিল কেবল রাজশাহী ও চুয়াডাঙ্গা জেলায়। কিন্তু শনিবার তা ঢাকাসহ চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, সিরাজগঞ্জ ও যশোরেও বিস্তৃত হয়।
আবহাওয়া অফিস বলছে, চলমান এই তাপপ্রবাহ ধীরে ধীরে প্রশমিত হতে পারে, বিশেষ করে যেসব অঞ্চলে বৃষ্টি হবে সেখানে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা বেশি। তবে তীব্র গরম থেকে পুরোপুরি মুক্তি পেতে আগামী কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময় বাইরে প্রয়োজন ছাড়া বের না হওয়া, পর্যাপ্ত পানি পান, হালকা কাপড় পরিধান এবং ঠান্ডা পরিবেশে থাকার চেষ্টা করা উচিত। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের গরমে বিশেষভাবে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
এই তাপপ্রবাহ কবে নাগাদ পুরোপুরি কমবে—তা নির্ভর করছে বৃষ্টিপাতের বিস্তার ও ধারাবাহিকতার ওপর। তবে আপাতত উত্তরের কিছু এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা একটুখানি স্বস্তির ইঙ্গিত দিচ্ছে।
নদীবন্দর/এএস