1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
নিষিদ্ধ হলো আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম, প্রজ্ঞাপন জারি - Nadibandar.com
সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ০৯:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আ. লীগ এবং তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রচারণা নিষিদ্ধ ঈদে ১৩ দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে সিএনজি স্টেশন যুদ্ধ কোনো রোমান্টিক ব্যাপার কিংবা বলিউড মুভি নয়: ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান সড়কে কোরবানির পশুর হাট বসানো যাবে না: উপদেষ্টা ফাওজুল গেজেট প্রকাশ করলেই আ.লীগের নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত: সিইসি গুলি করে ৩ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি নটরডেম কলেজের ভবন থেকে পড়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু পুলিশের হাতে থাকবে না প্রাণঘাতী অস্ত্র: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অপারেশন সিঁদুর: রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন মোদি সাইকেল কিনতে এসে টাকা চুরি, দেখে ফেলায় দুই খালাকে খুন
নদীবন্দর,ঢাকা
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১২ মে, ২০২৫
  • ২ বার পঠিত

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্য দিয়ে গণহত্যার অভিযোগের বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটির সবধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলো।

সোমবার (১২ মে) বিকেলে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখা-২ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের সবধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন এরই মধ্যে হয়ে গেছে। অধ্যাদেশ অনুসারে বিষয়টি বাস্তবায়নের দায়িত্ব আমাদের।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যেহেতু ২০০৯ সালে ৬ জানুয়ারি সরকার গঠনের পর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সদস্য ও ভিন্নমতের মানুষের উপর হামলা, গুম, খুন, হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন নিপীড়নমূলক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে; এবং

যেহেতু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের বিরুদ্ধে গত ১৫ জুলাই থেকে ০৫ আগস্ট ২০২৪ খ্রি. পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে গুম, খুন, পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, গণহত্যা, বেআইনি আটক, অমানবিক নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাসী কার্য ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে এবং এসব অভিযোগ দেশি ও আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে; এবং

যেহেতু উল্লেখিত অপরাধসমূহের অভিযোগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং দেশের ফৌজদারি আদালতে বহুসংখ্যক মামলা বিচারাধীন রয়েছে; এবং

যেহেতু এসকল মামলার বিচারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, বাংলাদেশের সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার লক্ষ্যে গত ০৫ আগস্ট ২০২৪ খ্রি. পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন কর্তৃক গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার উপর হামলা, উস্কানিমূলক মিছিল আয়োজন, রাষ্ট্রবিরোধী লিফলেট বিতরণ এবং ভিনদেশে পলাতক তাদের নেত্রীসহ অন্য নেতাকর্মী কর্তৃক সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অপরাধমূলক বক্তব্য প্রদান, ব্যক্তি ও প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের প্রচেষ্টাসহ আইন-শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ড পরিলক্ষিত হয়েছে; এবং

যেহেতু এসকল কর্মকাণ্ডে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে, দলটি এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার বাদী ও সাক্ষীদের মনে ভীতির সঞ্চার করা হয়েছে ও এভাবে বিচার বিঘ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং সার্বিকভাবে দেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়ার আশংকা সৃষ্টি হয়েছে; এবং

যেহেতু সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল ও অকার্যকর করার লক্ষ্যে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকানণ্ডে জড়িত থাকাসহ জনমনে ভীতি সঞ্চারের উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী সংগঠনের ন্যায় বিভিন্ন বেআইনি কার্যকলাপ ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে; এবং

যেহেতু, সরকার যুক্তিসংগতভাবে মনে করে সন্ত্রাস বিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০১ এর ধারা-১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটি এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা সমীচীন;

সেহেতু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন কর্তৃক যেকোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেকোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।

এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনের শেষে উল্লেখ করা হয়।

এর আগে শনিবার (১০ মে) রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। তখন জানানো হয়েছিল, পরবর্তী প্রথম কার্যদিবসে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। যেহেতু গতকাল বৌদ্ধ পূর্ণিমার ছুটি ছিল এজন্য আজ প্রথম কার্যদিবসেই জারি হলো প্রজ্ঞাপন।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া প্রাচীন দল আওয়ামী লীগ টানা ১৫ বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকাকালে নানা অপকর্মে জড়িয়ে যায়। সবশেষ গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বল প্রয়োগের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে ঘৃণিত হয়। সেই আন্দোলন ঠেকাতে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং তাদের নিয়ন্ত্রিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এক হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই আন্দোলনে পঙ্গু হওয়া হাজার হাজার মানুষ এখনো মানবেতর জীবনযাপন করছে।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা হারান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। পালিয়ে যান ভারতে। এরপর থেকে দলটি কার্যত অস্তিত্বহীন। ছন্নছাড়া অবস্থায় রয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। নেতাদের অনেকেই বিদেশে পালিয়ে গেছেন, কেউ কেউ গ্রেফতার হয়েছেন। বেশির ভাগ নেতা দেশে গা ঢাকা দিয়ে আছেন। লাখো কর্মী প্রকাশ্যে আসতে পারছেন না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বলে পরিচয় দেওয়ার মতো পরিস্থিতিও নেই তাদের।

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি উঠে আসছে বিভিন্ন মহল থেকে। ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধও ঘোষণা করা হয়। তবে বিএনপিসহ কোনো কোনো দল এবং সরকারের মনোভাব ছিল- কোনো দল আইন করে নিষিদ্ধ না করা। তবে গত ৭ মে গভীর রাতে সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর নতুন করে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন জোরদার হয়। জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা আবার এই দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নেন। সেখানে দুই দিন আন্দোলন শেষে তারা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। একই দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানেও আন্দোলন অব্যাহত থাকে। অবশেষে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার অনেকটা বাধ্য হয়ে আওয়ামী লীগের মতো অন্যতম বৃহৎ দলের কার্যক্রম সাময়িক নিষিদ্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয়।

নদীবন্দর/জেএস

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com