জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দিনভর আন্দোলনের বিষয়টি সমাধান করতে গিয়ে বিব্রতকর ঘটনার শিকার হয়েছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন কে বা কারা একটি বোতল ছুড়ে মারে তার মাথায়। পানিসহ বোতলটি তার মাথায় এসে সরাসরি আঘাত করেছ। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। এই ঘটনার জন্য একটি গোষ্ঠীকে মাহফুজ আলম দায়ী করেছেন, যারা গত নয় মাস ধরে তার পেছনে লেগে আছে।
বুধবার (১৪ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই ঘটনার পরপর প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তথ্য উপদেষ্টা।
এসময় তিনি বোতল নিক্ষেপের বিষয়ে বলেন, ‘গত নয় মাস ধরে একটা গোষ্ঠী আমার ওপর ক্ষেপে আছে। তারা অনলাইনে বিভিন্নভাবে আমার নামে বিদ্বেষমূলক কথাবার্তা বলছে। আজকের ঘটনা আমি নিশ্চিত ওই গোষ্ঠী ঘটিয়েছে।’
এ সময় তথ্য উপদেষ্টা জানান, শিগগিরই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বৈঠক হবে। সেখানে আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিষয় সমাধান হবে।
এর আগে রাত দশটার দিকে কাকরাইল মসজিদের পাশে পুলিশি ব্যারিকেটের সামনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন মাহফুজ আলম। এসময় হঠাৎ কে বা কারা পানির বোতল ছুঁড়ে মারে। বোতলটি গিয়ে মাহফুজ আলমের মাথায় লাগার পর নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তিনি কথা শেষ না করেই যমুনার দিকে চলে যান।
পরে কিছুটা ভেতরের দিকে গিয়ে আবারও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তথ্য উপদেষ্টা।
বক্তব্যের শুরুতে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা ন্যায্য দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছেন। এ বিষয়ে আগামীকাল শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে ডায়ালগের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।
এরপর দুপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের কথা তুলে ধরতে গিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আজকে হয়তো কিছু পুলিশ সদস্য…..একথা বলতেই শিক্ষার্থীরা ভুয়া ভুয়া বলে চিৎকার করেন। এরমধ্যে হঠাৎ করে কিছু একটা মাথায় পড়তে দেখা যায়।
এরপর উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, আমি আর কথা বলবো না। পরে পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে তিনি প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে চলে যান।
প্রথম দফায় উপদেষ্টা কথা বলার আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, আন্দোলন, সৌজন্যতা ও শৃঙ্খলায় আমরা শ্রেষ্ঠ সেটা প্রমাণ করতে হবে। সবাই উপদেষ্টার কথা মন দিয়ে শুনবে।
ভিসি বলেন, জগন্নাথের দাবিগুলোর বিষয়ে ইউজিসির চেয়ারম্যান কথা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছেন। আমরাও সরকারের অন্যান্য পর্যা্য়ে কথা বলেছি।
উপাচার্য বলেন, যৌক্তিক দাবি নিয়ে এসেছিলাম। এখানে যে পরিস্থিতির মুখে পড়েছি তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। আমাদের যে তিন দফা দাবি ছিল তা নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছি। যারা হামলায় জড়িত তাদের বিচারের বিষয়ে কথা বলে এসেছি। সরকারের পক্ষ থেকে একজন দায়িত্বশীল উপদেষ্টাকে নিয়ে এসেছি।
অন্যদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্দিন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, সম্মানীয় ব্যক্তিদের সম্মান দিতে হবে। আমরা সবদিকে শ্রেষ্ঠ। ভদ্রতার দিক থেকে শ্রেষ্ঠ। তিনি কথা বলার সময় স্লোগান দেবে না। স্লোগানের দরকার হলে সবার আগে দেবো।
নদীবন্দর/এএস