দেশের উপকূল অতিক্রম করতে থাকা গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে রাজধানীসহ সারা দেশে অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে। সঙ্গে চলছে দমকা হাওয়া।
টানা বর্ষণের কারণে রাজধানীর অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে মিরপুর ১০ নম্বর ও এর আশপাশের এলাকার বেশিরভাগ সড়কে এখন পানি থৈ থৈ করছে। ফলে এলাকার বাসিন্দারা পড়েছেন ভোগান্তিতে।
দেশের বিভিন্ন এলাকার মতো বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ভোর থেকেই রাজধানীতে বৃষ্টি শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়তে থাকে। দুপুরের পর নগরের প্রধান প্রধান সড়কসহ অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা যায়।
সন্ধ্যার পর মিরপুর ১০ নম্বর এলাকায় দেখা যায়, এখানকার মূল সড়ক ও অলি-গলিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও তারও বেশি জলাবদ্ধতা দেখা যায়। এ কারণে ছোট গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বাসের মতো যানবাহনও চলছে ধীরগতিতে, ফলে দেখা দিয়েছে যানজট। মেট্রোরেল থেকে যে যাত্রীরা নামছিলেন, তাদের পানিতে পা ডুবিয়েই গন্তব্যের দিকে হাঁটতে দেখা যায়।
মতিঝিল থেকে অফিস করে মিরপুরের বাসায় ফিরছিলেন মোহাম্মদ ইসহাক আলী (৫০)। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, সকালে ভিজতে ভিজতে অফিসে গিয়েছিলাম। আর এখন বন্যায় ভাসতে ভাসতে বাসায় ফিরছি।
মিরপুর ১৩ নম্বর এলাকার এ বাসিন্দা বলেন, একটু বৃষ্টি হলে এই এলাকা এভাবেই ভাসতে থাকে। এর কোনো সমাধান আছে কি না কর্তৃপক্ষ ভালো জানে। এ ব্যাপারে আমাদের আর কথা বলতে ইচ্ছা হয় না। কপালে দুর্ভোগ আছে, সেটাই সারা বছর পোহাতে হচ্ছে।
মিরপুর ১০ নম্বর এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ ওবায়দুল হক বলেন, আমি বিগত ১২ বছর যাবত মিরপুর এই এলাকায় বসবাস করি। কিন্তু আজ পর্যন্ত একটু দেখলাম না যে বৃষ্টির পরে আমরা স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারি। একটু বৃষ্টি হলেই আমাদের আর বাসা থেকে বের হওয়া যায় না, কর্মস্থলেও যেতে পারি না। এ সমস্যার সমাধান কবে কে করবে? আর কতদিন আমাদের এই জলাবদ্ধতায় ভুগতে হবে।
এই এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, রাতভর যদি এভাবে বৃষ্টি চলতে থাকে, তাহলে সকালে জলাবদ্ধতা আরও বাড়তে থাকবে। এতে নিচতলার বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে জলাবদ্ধতার কারণে কিছু এলাকায় যানবাহন সংকট তৈরি হয়েছে। ফলে সেসব এলাকায় রিকশা বা সিএনজি অটোরিকশাযোগে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে লোকজনকে। কিন্তু বৃষ্টির সুযোগে এসব বাহনের চালকরা হাঁকছেন অতিরিক্ত ভাড়া। বিশেষ করে রিকশায় ২০-৩০ টাকার ভাড়া ১০০-১৫০ টাকা চাইতেও দেখা গেছে। এ নিয়ে যাত্রীসাধারণকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। তবে চালকরা বলছিলেন, সাধারণ সময়ের তুলনায় বৃষ্টিতে ভিজে বেশি কষ্ট করেন বলে খানিকটা বাড়তি ভাড়া চান তারা।
নদীবন্দর/জেএস