পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান শেষে ১৬ লাখের বেশি হাজি এখন কয়েক কিলোমিটার দূরের মুজদালিফায় যাচ্ছেন। সেখানে তারা রাত যাপন করবেন। এটি হজের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। সেখান থেকে কংকর সংগ্রহ করে আগামীকাল বাদ ফজর হাজিরা মিনার উদ্দেশে রওয়ানা করবেন। এদিন শয়তানকে কংকর নিক্ষেপ, পশু জবাই, ফরজ তওয়াফসহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা পালন করবেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে মাগরিবের নামাজ আদায় না করে হাজিরা ছুটে চলেছেন মুজদালিফার দিকে। সেখানে পৌঁছে এক আজান ও দুই ইকামতে মাগরিব ও ইশার নামাজ আদায় করবেন হাজিরা। আরাফাতের ময়দান থেকে মুজদালিফার দূরত্ব প্রায় আট কিলোমিটার। তবে একসঙ্গে লাখ লাখ মানুষ যাত্রা করায় এই পথ পাড়ি দিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বেলা ১২টার পর (বাংলাদেশ সময় তিনটার পর) ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে মসজিদে নামিরায় ১৪৪৬ হিজরি সনের হজের খুতবা দেন সৌদি আরবের প্রখ্যাত আলেম ও বিচারবিদ শায়খ ড. সালেহ বিন আবদুল্লাহ বিন হুমাইদ। এবারের হজের খুতবার অনুবাদ বাংলাসহ বিশ্বের ৩৫টি ভাষায় সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।
এর আগে পবিত্র সকালে থেকে আরাফাতের ময়দানে অবস্থান নেন লাখ লাখ লাখ হাজি। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠে আরাফাতের ময়দান।
খুতবা শেষে আরাফাতের ময়দানে এক আজান এবং দুই ইকামতে জোহর ও আসরের নামাজ একসঙ্গে আদায় করেন হাজিরা। পরে তারা সূর্যাস্ত পর্যন্ত সেখানে ইবাদত-বন্দেগিতে কাটান।
মুজদালিফায় রাত কাটিয়ে সেখান থেকে কংকর সংগ্রহ করে হাজিরা আগামীকাল শুক্রবার (৬ জুন) আবার মিনার ময়দানে যাবেন। সেখানে শয়তানকে কংকর মারা এবং পশু কোবরানির বিধান পালন করবেন। এছাড়া বায়তুল্লাহয় গিয়ে ফরজ তওয়াফও আদায় করবেন তারা। পরে মিনায় এসে আরও দুই দিন অবস্থান এবং টানা দুই দিন শয়তানকে কংকর মারার মাধ্যমে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।
সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ বছর হজ পালন করেছেন বিশ্বের ১৬ লাখের বেশি মুসলমান। বিশ্বের ১৭১টি দেশ থেকে এবার হজের জন্য নিবন্ধন করেছেন ১৬ লাখ ৭৩ হাজার ২৩০ জন।
এর মধ্যে সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ নিবন্ধিত হাজি ছিলেন এক লাখ ৬৬ হাজার ৬৫৪ জন এবং বিভিন্ন দেশ থেকে আগত হাজির সংখ্যা ছিল ১৫ লাখ ছয় হাজার ৫৭৬ জন। পুরুষ হাজির সংখ্যা ছিল আট লাখ ৭৭ হাজার ৮৪১ জন। নারী হাজির সংখ্যা ছিল সাত লাখ ৯৫ হাজার ৩৮৯ জন।
এই হাজিদের মধ্যে বিমানে সৌদি আরবে গমন করেছেন ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ১৭ জন। নৌপথে সৌদিতে এসেছেন পাঁচ হাজার ৯৪ জন। মাইক্রো, কার ও এ জাতীয় পরিবহনে হজ করতে গেছেন ৬৬ হাজার ৪৬৫ জন হজযাত্রী।
নদীবন্দর/জেএস