ঢাকা থেকে রাজশাহী রুটে শ্যামলী এনআর পরিবহনের বাস টিকিটের নির্ধারিত ভাড়া যেখানে ৬৯০ টাকা, ঈদ উৎসবকে কেন্দ্র করে সেই টিকিটই বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকায়!
সরেজমিনে দেখা গেছে, শ্যামলী পরিবহনের নিজস্ব কাউন্টার থেকে একটি চক্র আগেই টিকিট সংগ্রহ করে কালোবাজারে বেশি দামে বিক্রি করছে।
ঈদের সময় অনলাইন বুকিংয়ের মাধ্যমে ভাড়া ৮৭০ টাকা আদায় করলেও বেশির ভাগ টিকিট শুরুতেই কিনে নিয়েছে চক্রটি। শ্যামলী কাউন্টারের ম্যানেজার নিজেই এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই টিকিট শ্যামলী এনআর পরিবহনের প্রধান কাউন্টারে পাওয়া যাচ্ছে ৪০০–৫০০ টাকা অতিরিক্ত দিয়ে।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে চক্রটির একজন সদস্য বলেন, ‘ঈদের সময়েও বেতন-বোনাস না পেয়ে অনেকেই কৌশলে আয় করার পথ খুঁজছে। আমরা কাউন্টার থেকেই টিকিট আগে কিনে নিই, তারপর গাড়ি ছাড়ার আধাঘণ্টা আগে বেশি দামে বিক্রি করি।’
এভাবে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়ছে। এক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, ‘বাস বা ট্রেনে কোথাও টিকিট পাচ্ছিলাম না। বাধ্য হয়ে এখানে এসেছি। কাউন্টার ম্যানেজারের সামনেই অতিরিক্ত টাকা দিলে টিকিট মিলল। আমি ৪০০ টাকা বেশি দিয়ে টিকিট কিনেছি।’
আরেকজন যাত্রী যিনি নিজেও পরিবহন খাতের সঙ্গে যুক্ত তিনি বলেন, ‘আমার আত্মীয়ের জন্য টিকিট কিনতে এসে দেখি অতিরিক্ত ৫০০ টাকা না দিলে টিকিট মিলছে না। এটা মালিকের অজানা হওয়ার কথা নয়। কারণ, সিসিটিভির মাধ্যমে সবই নজরদারিতে থাকে।’
এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে শ্যামলী এনআর পরিবহনের ব্যবস্থাপক শুভঙ্কর ঘোষ ওরফে রাকেশকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। একইভাবে বিআরটিএ চেয়ারম্যান মো. ইয়াসিনকেও ফোন করা হলে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিবহন খাতে এ ধরনের কালোবাজারি শুধু সাধারণ মানুষের হয়রানিই বাড়ায় না, বরং পুরো খাতের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করে দেয়। ঈদের মতো জাতীয় উৎসবে টিকিট ব্যবস্থাপনায় সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর নজরদারি আরও জোরদার করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
নদীবন্দর/ইপিটি