বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ ইচ্ছে থাকলেও সন্তান নিতে পারছেন না। এজন্য সন্তান লালনপালনের বাড়তি খরচ ও উপযুক্ত সঙ্গীর অভাবকে অন্যতম কারণ বিবেচনা করা হচ্ছে। ফলে বিশ্বে নজীরবিহীনভাবে কমেছে সন্তান জন্মের হার।
জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ইউএনএফপিএ ১৪টি দেশের ১৪ হাজার মানুষের ওপর সন্তান নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে জরিপ চালিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন— তরুণ, প্রাপ্তবয়স্ক ও প্রজননের সময়সীমা পেরিয়ে গেছে।
জরিপে অংশ নেওয়া পাঁচজনের মধ্যে একজন বলেছেন, তাদের কাঙ্ক্ষিতসংখ্যক সন্তান হয়নি বা তারা সন্তানের আশাও করেননি।
নিম্ন, মধ্য ও উচ্চ—তিন ধরনের আয়ের দেশ নিয়ে জরিপটি করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— থাইল্যান্ড, হাঙ্গেরি, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, জার্মানি, সুইডেন, ব্রাজিল, মেক্সিকো, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, মরক্কো, নাইজেরিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক–তৃতীয়াংশ এসব দেশে বসবাস করে।
ইউএনএফপিএর প্রধান নাতালিয়া কানেম বলেন, বিশ্বজুড়ে সন্তান জন্ম দেওয়ার হার নজিরবিহীনভাবে কমে গেছে। জরিপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ মানুষ দুই বা ততোধিক সন্তান চান। কিন্তু তারা কাঙ্ক্ষিত পরিবার গড়তে পারছেন না। এটাই প্রকৃত সংকট।
ফিনল্যান্ড সরকারের জনসংখ্যা নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা জনসংখ্যাবিদ আনা রটকির্চ বলেছেন, ‘এটি একটি বাস্তব সংকট, যা একটি পরিবর্তনের আভাস।’
সব দেশ মিলিয়ে জরিপে অংশ নেওয়া ৩৯ শতাংশ মানুষ বলেছেন, আর্থিক সীমাবদ্ধতায় তারা কাঙ্ক্ষিত সংখ্যায় সন্তান নিতে পারেননি। এই হার সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ কোরিয়ায়, ৫৮ শতাংশ। সবচেয়ে কম সুইডেনে, ১৯ শতাংশ।
অন্যদিকে, কাঙ্ক্ষিত সংখ্যায় সন্তান না নিতে পারার পেছনে জন্মদানে অক্ষমতাকে দায়ী করেছেন ১২ শতাংশ মানুষ। একক দেশ হিসেবে এই হার কয়েকটি দেশে বেশি। যেমন— থাইল্যান্ডে ১৯ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৫ শতাংশ, নাইজেরিয়ায় ১৪ শতাংশ এবং ভারতে ১৩ শতাংশ।
ইউএনএফপিএর হিসাবে, কাঙ্ক্ষিত সংখ্যায় সন্তান নিতে না পারার পেছনে অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার চেয়েও বড় বাধা সময়ের অপর্যাপ্ততা।
এ বিষয়ে আরও গবেষণার জন্য চলতি বছরের শেষের দিকে ৫০টি দেশে জরিপ চালাবে ইউএনএফপি।
সূত্র: বিবিসি
নদীবন্দর/জেএস