1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
‘স্বৈরাচারের উৎপত্তি বন্ধে স্বাধীন ইসি প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই’ - Nadibandar.com
বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১০:৫৬ অপরাহ্ন
নদীবন্দর, ঢাকা
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫
  • ১ বার পঠিত

স্বৈরাচার রুখতে হলে দেশে একটি সত্যিকারের স্বাধীন নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, “কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যদি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করতে পারে, এখানেই কিন্তু স্বৈরাচারের উৎপত্তিটা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।”

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে নাগরিক ঐক্যের ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যদি সত্যিকার স্বাধীন নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করতে পারে এখানেই কিন্তু স্বৈরাচারের উৎপত্তিটা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। শুধুমাত্র নির্বাহী বিভাগকে দুর্বল করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামো দাঁড় করানো যাবে না। নির্বাহী বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের কাজ করতে দিতে হবে, বিচার বিভাগকে বিচার বিভাগের কাজ করতে দিতে হবে এবং আইনসভাকে আইনের কাজ করতে দিতে হবে। সেখানেই থাকবে একটা কমপ্লিট ব্যালেন্স অব পাওয়ার।

তিনি বলেন, ‘আমরা আইনের ভাষায় যেটা বলি সেপারেশন অব পাওয়ার থিউরি। যার মূল কথা হলো, ‘হারমোনিয়াস কোঅপারেশন ইন বিটুইন অল দ্যা অর্গানস অব দ্যা স্টেট শুড বি স্ট্যাবলিশড’। তাহলে কোনো অঙ্গ আরেক অঙ্গের ওপরে আধিপত্য বিস্তার করতে পারবে না। সবাই হবে একে অপরের পাহারাদার।’

‘জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন প্রসঙ্গে’

জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন নিয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে সালাহউদ্দিন বলেন, “আমরা বলেছি, ১০ বছরের বেশি কেউ যেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীত্বের আসনে বসতে না পারেন। এখানেই কিন্তু স্বৈরাচার রোধ করা হলো। এখানেই ফ্যাসিবাদকে প্রতিহত করা হলো।”

তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্রের সব গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে একটি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে হবে। প্রথমত, বিচার বিভাগের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এটি হবে গণতন্ত্রের মূল রক্ষাকবচ। দ্বিতীয়ত, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে, এবং তৃতীয়ত, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।”

তিনি বলেন, ‘তারপর কী করা হবে? রাষ্ট্রের সমস্ত গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই এই গণতন্ত্র রক্ষাকবজ হিসেবে শক্তিশালীর ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো হবে। তার জন্য কী করতে হবে? এক নম্বর বিচার বিভাগের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। এটা (বিচার বিভাগের স্বাধীনতা) যদি আমরা সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিত করতে পারি তাহলে এটা গণতন্ত্রের রক্ষাকবজ হবে। দুই নম্বর, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে এবং তিন নম্বর নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে নাগরিক ঐক্যের ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।

২০১২ সালের ১ জুন বাংলাদেশকে কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে মাহমুদুর রহমানের নেতৃত্বে নাগরিক ঐক্য যাত্রা শুরু করে।

৭০ অনুচ্ছেদ ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রসঙ্গ

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা ৭০ অনুচ্ছেদের মধ্যে সংস্কার এনেছি, সবাই ঐক্যমত্যে পৌঁছেছি। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব দিয়েছি—রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এমপিরা যেন গোপন ব্যালটে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারেন। এটি একটি বড় পরিবর্তনের সূচনা হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি প্রতিক্ষেত্রে নির্বাহী বিভাগকে সীমাবদ্ধ করি আইনিভাবে-সাংবিধানিকভাবে… তাহলে কিন্তু নির্বাহী বিভাগ দুর্বল হবে… রাষ্ট্র পরিচালনা করা যাবে না, সরকার পরিচালনা করা যাবে না। আর যদি যে যার জায়গায় নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, আইনসভা তার তার সীমাবদ্ধের মধ্যে কাজ করতে বাধ্য থাকে সেই ব্যবস্থাটা আমরা গ্রহণ করি। তাহলে প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রের সংস্কার হবে। আমরা সেই সংস্কার চাই, যে সংস্কারের মধ্যে কোনো বিভাগের ক্ষমতা খর্ব হবে না।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘আমরা সেই সংস্কার চাই, যেই সংস্কারের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো নির্মিত হবে, সেই সংস্কার আমরা চাই যার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার হবে, সংবিধানের গণতান্ত্রিক সংস্কার হবে এবং যার ফলোশ্রুতিতে আমরা জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে পারব। সেই রাষ্ট্র ব্যবস্থা, সেই সমাজ ব্যবস্থা আমরা কামনা করি।’

‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স আনতে হবে’

সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স এবং একটা হারমোনিয়াস কোপারেশন, একটা মধুর সম্পর্ক, একটা পাহারাদার সৃষ্টি করা, সেইফ গার্ড সৃষ্টি করার জন্য সব অর্গানগুলোকে সেইভাবে শক্তিশালী করা। সব গণতান্ত্রিক এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালীর ভিত্তির ওপরে দাঁড় করানো যাতে তারা নিজস্ব এখতিয়ারের মধ্যে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। তাহলে আর কোনোদিন এদেশে স্বৈরাচারের উপত্তি হবে না। আমরা ক্রমান্বয়ে সেদিকে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র নির্বাহী বিভাগকে দুর্বল করার মধ্য দিয়ে কিন্তু রাষ্ট্র একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামো দাঁড় করানো যাবে না। নির্বাহী বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের কাজ করতে দিতে হবে, বিচার বিভাগকে বিচার বিভাগের কাজ করতে দিতে হবে এবং আইনসভাকে আইনের কাজ করতে দিতে হবে।

ধর্ম নিয়ে রাষ্ট্রীয় নীতিতে বিভাজন চান না মান্না

আলোচনা সভার সভাপতি নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘ধর্ম নিয়ে সংবিধানে বিতর্ক তৈরি করা অনুচিত। আমি মুসলমান, আমি আমার ধর্মে বিশ্বাস করি। কিন্তু এই রাষ্ট্রে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানরাও আছেন। তাই ধর্ম নিয়ে রাষ্ট্রীয় নীতিতে বিভাজন তৈরি করা ঠিক নয়।’

‘আমরা অনেকগুলো বছর পার করেছি, ধর্মে বিশ্বাস করেছি কিন্তু সংবিধানে লিখেনি। কেন লিখেনি… আমার অন্তরে যেটা আছে সেটা আমার। আমি মুসলমান। আমি এই ধর্মে বিশ্বাস করি, আমি তার কথা বলছি। কিন্তু এই রাষ্ট্রে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান তারাও তো আছে। তারা তো আমার এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘চোখ-কান খোলা রাখুন। খরগোশের মতো কান সব সময় সচল রাখবেন। সত্যিই কী হচ্ছে, সেটি দেখুন।’

আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, ভাসানী জনশক্তি পার্টির শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, সিপিবির রুহিন হোসেন প্রিন্স, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল, গণফোরামের মোহাম্মদ উল্লাহ মধু, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ বক্তব্য দেন।

নদীবন্দর/ইপিটি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com