সম্প্রতি ট্রাইব্যুনালের মামলায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পলাতক দেখিয়ে আদালতে হাজির হতে কয়েকটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এবার আরেকটি মামলায় তাকেসহ ২৩ জনকে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির পাঁচ মামলায় ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালতে শুনানি হয়। পরে বিচারক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ ২৩ জনকে আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন।
দেশত্যাগের আগে ‘ভুল ইংরেজি’তে স্বজনদের যে ক্ষুদে বার্তা দেন শেখ হাসিনা
এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদালত আগামী ২০ জুলাই দিন ঠিক করেছেন বলে জানিয়েছেন দুদকের কৌঁসুলি মীর আহমেদ আলী সালাম। এই আইনজীবী বলেন, প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির ছয়টি মামলার শুনানির জন্য আজ দিন ধার্য ছিল। এক মামলায় গত ১৭ জুন গেজেট প্রকাশের নির্দেশ হয়। তবে গেজেট প্রকাশিত হয়নি। অপর পাঁচ মামলার ২৩ আসামি পলাতক অবস্থায় রয়েছেন মর্মে প্রতিবেদন এসেছে। আমরা আসামিদের আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের আবেদন করি। আদালত বিজি প্রেসের মাধ্যমে আসামিদের আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন।
এই মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে রাজধানীর অদূরে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ছয়টি প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে গত ডিসেম্বরে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পরে কয়েক ধাপে ছয়টি মামলা করা হয়। এসব মামলার অভিযোগপত্রও দাখিল করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। ওইদিনই শেখ হাসিনা তার ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে ভারতে চলে যান। তার পরিবারের অন্য সদস্যরাও দেশের বাইরে রয়েছেন। তাদের অনুপস্থিতিতেই হত্যা, হত্যাচেষ্টা, দুর্নীতিসহ বেশ কিছু মামলার বিচারকাজ চলছে দেশের বিভিন্ন আদালতে।
নদীবন্দর/এএস