ফেনীতে ২৪ ঘণ্টায় ২৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। যা চলতি বছরে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।
পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফেনীর ফুলগাজীতে মুহুরী নদীতে ভেসে গেছে দুটি দোকান ঘর, নদী পাড়ের রাস্তা ভেঙ্গে ফুলগাজী বাজার থেকে রাজসপুর সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এমতাবস্থায় ফেনীর সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সকল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। তবে শিক্ষা বোর্ড থেকে পরীক্ষা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো প্রজ্ঞাপন জানা যায়নি। টানা ভারী বৃষ্টির কারণে ফেনীতে আবার বন্যা হওয়ার আশঙ্কায় জনগণে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, সোমবার (৭ জুলাই) সকাল ৯টা হতে আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ফেনীতে ১৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি চলতে মৌসুমের জন্য সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।
জানা যায়, গতকাল বিকেল থেকে ফেনীতে ভারী বর্ষণ শুরু হয়। বৃষ্টির পানিতে ফেনী শহর নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। শহরের অলিতে গলিতে কোথাও কোথাও সড়কে তিন থেকে চার ফুট পানি জমেছে। গ্রামগঞ্জের রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে অনেক এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে।
ফেনী শহর ঘুরে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টির কারণে শহরের প্রধান সড়ক শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার রোড, রামপুর শাহীন একাডেমি এলাকা, পাঠান বাড়ি এলাকা, নাজির রোড, পেট্রো বাংলাসহ বিভিন্ন এলাকায় তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এসব এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। অতিরিক্ত পানির চাপে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এমতাবস্থায় দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
ফেনী সরকারি কলেজ থেকে বাংলা সমাপনী বর্ষের পরীক্ষার্থী ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নের খালেদুল আশরাফ বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে অনার্স সমাপনী বর্ষের পরীক্ষা রয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে গ্রামের রাস্তাঘাট ডুবে গেছে, সড়কে কোনো পরিবহন নেই। বোর্ড থেকেও পরীক্ষা স্থগিতের নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। এমতাবস্থায় কিভাবে কলেজে যাব? পরীক্ষা দেবো? সেটি বুঝতে পারছি না।
গাড়িচালক বেলায়েত হোসেন জানান, গত বছরের আগস্টে ফেনীতে ভয়াবহ বন্যার ক্ষয়ক্ষতি থেকে এখনো ফেনীর মানুষ কেটে উঠতে পারেনি। বৃষ্টি পরিস্থিতিতে আবার বন্যা শুরু হতে পারে। বন্যার ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচতে পরিবার ও স্বজনদের নিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যাওয়ার চিন্তা করছি।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারিয়া ইসলাম জানান, গতকাল থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে মুহুরী নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। আজ সকাল ৭টার দিকে ফুলগাজীর রাজেশপুর সড়কের মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে দুটি দোকান নদীতে ধসে গেছে। এতে করে ওই গ্রামের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা নাসরিন কান্তা বলেন, এখন প্রায় সকল স্কুলেই সান্মাসিক পরীক্ষা চলমান রয়েছে। সড়ক ও স্কুলে পানি ওঠায় অনেক স্কুলে ইতোমধ্যে অন্তবর্তী পরীক্ষা স্থগিত করার নোটিশ দিয়েছে। তবে বোর্ড পর্যায়ে চলমান পরীক্ষা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নোটিশ পাওয়া যায়নি।
নদীবন্দর/জেএস