পুরান ঢাকার মিটফোর্ডে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে বীভৎসভাবে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনা দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুবদলের সম্পৃক্ততা আছে এমন অভিযোগ তুলে ঘরে-বাইরে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। এর মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে মুখ খুললেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এভাবে প্রকাশ্য হত্যাকাণ্ডের পরও কেন প্রধান অভিযুক্তকে সরকার ধরল না সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এসব ঘটনা সরকারের প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়ে হচ্ছে কি না সেটা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
শনিবার (১২ জুলাই) বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সঙ্গে ছাত্রদল মতবিনিময় অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তারেক রহমান।
দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করা ঘটনাটির কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, পুরান ঢাকায় যে ঘটনাটি ঘটেছে, আমরা খুব আশ্চর্যের সঙ্গে লক্ষ করেছি, স্ক্রিনে যাকে দেখেছি হত্যা করতে, তাকে কেন সরকার এখন পর্যন্ত অ্যারেস্ট করেনি? আমরা কি তবে ধরে নেব যে যারা বিভিন্নভাবে মব সৃষ্টি করে একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে, সেখানে সরকারের কোনো প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয় আছে? প্রশাসনের কোনো কারও কারও কোনো প্রশ্রয় আছে?
এসব ঘটনার পেছনে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিয়ে তারেক রহমান বলেন, ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হচ্ছে অদৃশ্য শক্তি। বিভিন্নভাবে যারা স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, জনগণের বিপরীতে দাঁড়িয়েছে, আমরা সরকারকে বারবার বলেছি, আমরা তাদের প্রশ্রয় দেব না। এই অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে জগণের জানমাল হেফাজত করা।
যারা মব তৈরি করছে, তাদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, সরকার কেন ব্যর্থ হচ্ছে? এই সরকারের কাছে আমাদের সবার প্রশ্ন, তারা কেন প্রশ্রয় দিচ্ছে, আশ্রয় দিচ্ছে?
তারেক রহমান বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে বারবার বলেছি, অন্যায়কারী যেই হোক আমরা প্রশ্রয় দেবো না। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সরকার কেন ব্যর্থ হচ্ছে? এখানে যে শহীদের বাবা প্রশ্ন তুলেছেন তার সঙ্গে মিলিয়ে আমরাও অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে একই প্রশ্ন করতে চাই।
জুলাই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, গত ১৫-১৬ বছরে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের বহু নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। বিএনপি ছাড়াও অনেক দলের নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। এমনকি নিরপেক্ষ অনেক মানুষও শহীদ হয়েছেন দেশের মানুষের অধিকার রক্ষা করতে গিয়ে। আগামীতে বিএনপি দেশের মানুষের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করতে পারলে এসব হত্যার বিচার সুষ্ঠুভাবে হবে। এ বিষয়ে সর্বোচ্চ উদ্যোগ নেবে বিএনপি।
ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল।
নদীবন্দর/জেএস