জামায়াতে ইসলামী আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা একটা লড়াই করেছি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। আরেকটা লড়াই হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ইনশাআল্লাহ। আমরা দুর্নীতি করব না। জামায়াত থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে কোনো এমপি-মন্ত্রী সরকারি প্লট গ্রহণ করবে না, ট্যাক্সবিহীন গাড়ি চড়বে না, নিজের হাতে টাকা চালাচালি করবে না। কোনো এমপি-মন্ত্রী যদি নির্দিষ্ট কাজের জন্য বরাদ্দ পেয়ে থাকেন কাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে দেশের ১৮ কোটি মানুষের কাছে তার প্রতিবেদন তুলে ধরতে বাধ্য থাকবেন।
শনিবার (১৯ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত জাতীয় সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বক্তব্য দেওয়ার এক পর্যায়ে তিনি মাথা ঘুরে পড়ে যান। পরে অবশ্য বসে বসে তিনি বক্তব্য দেন।
জামায়াত আমির বলেন, চাঁদা আমরা নেব না, দুর্নীতি আমরা করব না। দুর্নীতি আমরা করব না, সহ্যও করব না। এই বাংলাদেশ আমরা দেখতে চাই।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমি বলতে চাই, বাংলাদেশর কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণির মুক্তির জন্য আমার লড়াই নয়। রাস্তার একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী চা বাগানের একজন শ্রমিক, রক্ত পানি করা ঘাম ঝরানো রিকশা চালক ভাই, মাঠে ময়দানে বাংলাদেশের মানুষের মুখে যারা এক মুঠো ভাত তুলে দিতে চায় আমার সেই কৃষক বন্ধুটি আমি তাদের হয়ে আজকে কথা বলতে এসেছি। আমি কোনো অভিজাত শ্রেণির হয়ে কথা বলতে আসিনি।
বক্তব্যে আবেগপ্রবণ কণ্ঠে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমার আফসোস, যারা ২০২৪ সালে শহীদ হয়েছেন, আমি তাদের সঙ্গে শহীদ হতে পারিনি। আপনাদের কাছে দোয়া চাই- আগামী দিনের ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার লড়াইয়ে আল্লাহ যেন আমাকে শহীদের মর্যাদা দেন।
জামায়াত আমির আরও বলেন, আমি এখানে জামায়াতের আমির হিসেবে নয়, ১৮ কোটি মানুষের একজন প্রতিনিধি হিসেবে এসেছি। শিশুদের বন্ধু, যুবকদের ভাই, প্রবীণদের সহযোদ্ধা হয়ে এসেছি, এই জাতির মুক্তির প্রত্যয়ে।
তরুণ প্রজন্মকে বিশেষভাবে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তোমরা শুধু দর্শক হয়ে থাকবে না, এই দেশ গঠনের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে। এটা শুধু কোনো শ্রেণির যুদ্ধ নয়, এটা চাষি, মজুর, ছাত্র, যুবক—সব শ্রেণির মানুষের যুদ্ধ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমি কথা বলার সুযোগ পেয়েছি, এটি আল্লাহর ইচ্ছা। আবার অসুস্থ হয়ে পড়াটাও আল্লাহর পরীক্ষা। যতদিন হায়াত আছে, ততদিনই আমি লড়াই করে যাবো।
ডা. শফিকুর রহমান তার বক্তব্যে ২০২৪ সালে সংঘটিত ‘গণহত্যার’ বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, যে নির্মমতা চালানো হয়েছে, তার বিচার এই দেশের মাটিতেই হতে হবে।
নদীবন্দর/জেএস