ঢাকায় যে যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়েছে তার পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম মাত্র এক বছর আগেই বিয়ে করেছিলেন।
সোমবার বিকালে রাজশাহীর উপ-শহর তিন নম্বর সেক্টরের বাসায় গেলে স্বজনরা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তৌকিরের স্ত্রী রাজধানীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা।
তৌকির ইসলাম সাগরের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট এলাকায়। তবে তার পরিবার রাজশাহী উপ-শহরের সপুরা এলাকায় ‘আশ্রয়’ নামে একটি বহুতল ভবনে ভাড়া থাকেন। সেখানে তৌকিরের বাবা তহুরুল ইসলাম, মা সালেহা খাতুন, বোন সৃষ্টি ও বোনজামাই বসবাস করেন।
তৌকির ইসলাম রাজশাহীর ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। পরে পাবনা ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হন।
ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দোতলা একটি ভবনে বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়। এতে পাইলটসহ ১৯ জন নিহত এবং ১৬৪ জন আহত হয়েছে।
আইএসপিআর বলেছে, নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে কুর্মিটোলার এ কে খন্দকার বিমান বাহিনী ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান। এরপর যানটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়।
দুর্ঘটনা মোকাবিলায় ও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম যুদ্ধবিমানটিকে ঘনবসতি এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নেওয়ার ‘সর্বাত্মক চেষ্টা’ করেন। তবে ‘দুর্ভাগ্যবশত’ যানটি ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দোতলা একটি ভবনে দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়।
দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে বিমান বাহিনী একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর পরই পাইলট তৌকিরের আত্মীয়-স্বজনরা রাজশাহীর বাসায় আসতে শুরু করেন। কিছু পরে সেখানে ভিড় করেন সাংবাদিকরাও।
বাসার মালিক আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “তৌকির ইসলাম সাগর প্রথমবারের মত একা প্রশিক্ষণ বিমান চালাবেন- এই খবরে পুরো পরিবারের সদস্যরা আনন্দিত ও উচ্ছ্বসিত ছিলেন। দুপুরের পর তারা বিমান বিধ্বস্তের খবর পান। সে সময় জানতে পারেন, সাগর ঢাকার সিএমএইচে চিকিৎসাধীন।”
তিনি জানান, সাগরকে দেখতে পরিবারের সদস্যরা বিমানে ঢাকা যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করলে বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা হয়। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে র্যাবের একটি মাইক্রোবাসে করে বাসা থেকে তাদেরকে রাজশাহী শাহ মখদুম বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তারা ঢাকা রওনা হন।
আতিকুল ইসলাম জানান, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামের বাবা-মা, বোন ও বোনজামাই ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে মৃত্যুর খবর জানতেন না। পরিবারের সদস্যরা জানেন, সাগর জীবিত ও চিকিৎসাধীন।
নদীবন্দর/জেএস