রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বর্তমানে আটজন রোগী আইসিইউতে রয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এছাড়া শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় ১৩ জনকে কেবিনে নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাত ৮টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন। এ সময় তার সঙ্গে ইনস্টিটিউটের সিনিয়র চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।
ডা. নাসির বলেন, ‘আমাদের এ মুহূর্তে রক্তের কোনো প্রয়োজন নেই। স্কিন ডোনেশনও আমরা আপাতত নিচ্ছি না। আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ স্কিন ব্যাংকে আছে। লাগলে সেখান থেকে ব্যবহার করতে পারব। বিকাশ-নগদে অনেকে টাকা পাঠাতে চাচ্ছেন, সেগুলোরও প্রয়োজন নেই। বাচ্চাদের চিকিৎসার সব খরচ সরকার বহন করছে।’
রোগীদের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪২ জন। গতকাল ক্রিটিক্যাল রোগীর আটজনের একটি তালিকা আমরা দিয়েছিলাম। দুজন মারা যাওয়ায় সেটা এখন ছয়জনে এসে দাঁড়িয়েছে। গত দুই দিনে আমরা ১৩ জন রোগীকে কেবিনে স্থানান্তর করতে পেরেছি। এটি আমাদের জন্য একটি ভালো খবর। তাদের মধ্যে অনেককে আমরা দুই-এক দিনের মধ্যে বাসায় পাঠাতে পারব।’
ডা. নাসির আরও বলেন, ‘সংকটাপন্ন ছয়জনের মধ্যে তিনজনের অবস্থা কিছুটা ভালো হলেও বাকি তিনজনের অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। তাদের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে, ইতোমধ্যে সে বিষয়ে চিকিৎসাও শুরু হয়েছে।’
পরিচালক বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে চিকিৎসা সহায়তার আশ্বাস পেয়েছি। আমরা কোনো দেশকে আলাদাভাবে দেখছি না। বাচ্চাদের জন্য যাদের পরামর্শ ভালো মনে হচ্ছে, সেটাই নিচ্ছি। আমাদের দেশে যারা চিকিৎসক রয়েছেন, তাদের মধ্যেও কোনো মতবিরোধ নেই। আমরা যা করছি, সবই বাচ্চাদের ভালোর জন্য।’
তিনি বলেন, ‘ভারত থেকে ইতোমধ্যে প্রতিনিধি দল এসেছে। চীনের প্রতিনিধি দল এখনো পৌঁছেনি। তবে রোগীদের কেস সামারি নিয়ে জুমে কথা হয়েছে। চীন থেকে আজ রাতে পাঁচজনের একটি বিশেষজ্ঞ দল আসবে। ভারতের প্রতিনিধি দল আমাদের কেস সামারি দেখেছেন, তারা কিছু মতামত দিয়েছেন। আমরা বোর্ডের সঙ্গে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। যেগুলো রোগীদের জন্য ভালো মনে হচ্ছে, সেগুলোই গ্রহণ করছি।’
গত সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে মাইলস্টোনের স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে এখন পর্যন্ত সরকারি হিসেবে ৩১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও অনেকে।
নদীবন্দর/জেএস