অভাব আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে বাড়ছে বাল্যবিয়ের সংখ্যা। স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা বলছেন, এর জন্য দায়ী অসচেতনতা আর আর্থিক সঙ্কট। এদিকে বাল্য বিয়ে রোধে কাজ করছে বলে জানিয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনী।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হতে না হতেই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হচ্ছে কিশোরীকে। স্বপ্ন ছিলো পড়াশোনার। এরকম বাল্যবিয়ের দৃশ্য চরাঞ্চলসহ প্রত্যন্ত এলাকায়।
দরিদ্রতার সাথে সামাজিক সমালোচনা। আর বয়স বাড়ার সাথে সাথে আছে যৌতুকের অংক বেশি হবার শংকা। এছাড়া মেয়েরা সংসারের বোঝা এই কুসংস্কার থেকেও বাল্য বয়সে বিয়ে দেয়া, বলছেন অভিভাবকরা।
অভিভাবকরা জানান, বয়স বেশি হলে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা বেশি লাগে। কাপড়-চোপড় বেশি লাগে, খাবার বেশি লাগে- এজন্যই আমরা ছোট থাকতেই বিয়ে দিয়ে দিচ্ছি। অন্য অভিভাবক জানান, বয়স বেশি আমরা মেয়েটাকে বিয়ে দিতে পারবো না এবং যৌতুক লাগবে বেশি।
বেসরকারী সংস্থা প্লান ইন্টারন্যাশনালের জরিপ বলছে, কুড়িগ্রামে ২০২০ সালের আগস্টেই ৪৭টি বাল্যবিয়ে হয়েছে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই গর্ভধারণ করে কিশোরী মাতা। তাই অপুষ্টিতে ভুগছে তারা।
ভূরুঙ্গামারী কমিউনিটি হেলথ প্রোভাডার রাবেয়া বসরি বলেন, ছোট বয়সে বিয়ে হওয়াতে পুষ্টিহীনতায় ভোগে এবং অনেকে বাচ্চা নিয়ে আসে সেই বাচ্চাও অপুষ্টতা, মায়েরা ঠিক মতো হাঁটতেও পারে না।
বাল্যবিয়ে বৃদ্ধি পাওয়ার কথা স্বীকার করলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। তাগিদ দিয়েছেন সচেতনতা বাড়ানোর উপর।
ভূরুঙ্গামারীর বলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান বলেন, অনেক সময় ভুয়া কাজী থাকে, আমীন বলে বিয়ে পুড়িয়ে দেয়। আইনগতভাবে এদেরকে ধরা যায় না।
পুলিশ সুপার জানালেন, বাল্যবিয়ে রোধে কাজ করে যাচ্ছে আইন শৃংখলা বাহিনী।
কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে সংবাদ পেলে আমরা প্রয়োজন মতো আইনগত ব্যবস্থা নেই। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদেরকে বিভিন্ন সময়ে সাজা দেওয়া হয়, অথবা তাদেরকে নিয়মিত মামলায় সোপর্দ করা হয়।
সচেতনতার পাশাপাশি আইন প্রয়োগের মধ্য দিয়ে বাল্যবিয়ে রুখতে হবে, মনে করেন সচেতন মহল।
নদী বন্দর/আরকে