একের পর এক চাঞ্চল্যকর খবর বেরিয়ে আসছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদের বিষয়ে। তার আরও একটি বাসার খোঁজ পেয়েছে পুলিশ। আর সেই বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে নগদ ২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।
পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা রিয়াদের আরও চাঁদাবাজির বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। এছাড়া বাড্ডা এলাকায় রিয়াদের আরও একটি বাসার খোঁজ পাওয়া গেছে। সেখান থেকে নগদ ২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে, ঢাকার গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের পরিবারের কাছ থেকে চাঁদাবাজির মাসখানেক আগেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদসহ কয়েকজন আরও এক এমপির কাছ থেকে চাঁদা নেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাস খানেক আগে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আব্দুল কালাম আজাদের অফিসে হামলা চালিয়ে নগদ টাকা না থাকায় জোর করে ড্রয়ার থেকে চেক বই বের করে ৫ কোটি টাকার চেক লিখে নিয়ে যায় রিয়াদ।
রাজধানীর গ্রিন রোডে রংপুর-৬ আসনের সাবেক সদস্য সদস্য আবুল কালাম আজাদের একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ‘মব’ সৃষ্টি করে নগদ টাকা না পেয়ে ১১টি চেকে ৫ কোটি টাকা লিখে নিয়ে যায়।
সাবেক সংসদ সদস্যের ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ও শ্যালক সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান। চেক উদ্ধারের ঘটনায় মামলার বিষয়ে ডিএমপির রমনা বিভাগের নিউমার্কেট (নিউমার্কেট-কলাবাগান) জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জোর করে চেক নেওয়ার ঘটনায় ভুক্তভোগী সাবেক সংসদ সদস্যের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এদিকে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, শুধু সাবেক এমপির বাসাতেই নয়, গুলশান, বনানী, বাড্ডা এলাকায় অনেকের কাছ থেকেই তারা চাঁদা দাবি করেছে। তাদের ৮ থেকে ১০ জনের একটি গ্রুপ বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে। অনেকে মৌখিকভাবে অভিযোগও করেছে। সেই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গুলশান থানায় করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেসুর রহমান বলেন, মামলার তদন্ত চলেছে। সেসব তথ্য পাচ্ছি সেগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত ২৬ জুলাই সন্ধ্যার পর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডের ওই বাসায় ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেয়ার পর আরও ৪০ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন পাঁচজন।
তারা হলেন-মো. সাকাদাউন সিয়াম (২২), নাটোরের লালপুরের বাসিন্দা সাদমান সাদাব (২১), মো. আমিনুল ইসলাম (১৩), ইব্রাহীম হোসেন (২৪) এবং আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ (২৫)।
তাদের মধ্যে রিয়াদ নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার বাসিন্দা এবং ধানমন্ডির নিউ মডেল এলাকায় বসবাস করেন।এ ছাড়া ইব্রাহীমের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের রামদাসদী গ্রামে এবং আমিনুল বাড্ডা আলাতুন্নেছো স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র। ইব্রাহীম হোসেন মুন্না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক। মো. সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব সদস্য। পরে রাতেই চাঁদাবাজির ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর তিনজনকে বহিষ্কার করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় চারজনকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
নদীবন্দর/জেএস