বিমান বিধ্বস্তে ৩০ জনের বেশি কোমলমতী শিক্ষার্থী ও দুজন শিক্ষিকা হারানোর বেদনাকে সঙ্গী করেই রোববার (৩ আগস্ট) খুলে দেওয়া হচ্ছে উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
শনিবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল।
তবে মাইলস্টোন খুললেও এদিন ক্লাস বা পাঠদান কার্যক্রম চালু হবে না। শুধু মানসিক প্রশান্তি ও স্বাভাবিকতার দিকে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি খোলা হবে বলে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল বলেন, ‘বিমান দুর্ঘটনার পর পুরো ক্যাম্পাস এক হৃদয়বিদারক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থার উন্নয়ন ছাড়া এই মুহূর্তে আমাদের অন্য কোনো অগ্রাধিকার নেই। তাই আমরা আগামীকাল (৩ আগস্ট) সীমিত পরিসরে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির জন্য কলেজ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘শুরুতে কোনো ধরনের পাঠদান কার্যক্রম চালু করা হবে না। শিক্ষার্থীরা যেন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে, সে লক্ষ্যে আমরা ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়ার ব্যবস্থা রাখছি। শিক্ষার্থীরা কলেজে এসে শিক্ষকদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করবে, বন্ধুদের সঙ্গে মানসিকভাবে স্বস্তির জায়গায় ফিরে আসার সুযোগ পাবে। এটি আমাদের প্রথম ধাপ।’
বুলবুল আরও জানান, ‘আজও কলেজে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে এবং আগামীকালও একই কর্মসূচি চলবে। শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের পাশে আছেন, কাউন্সেলিং কার্যক্রম চালু আছে, এমনকি বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকেও একটি চিকিৎসা ক্যাম্প আমাদের ক্যাম্পাসে চলছে, যেখানে শারীরিক ও মানসিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীরা তাদের হারানো ছন্দে ফিরুক। আমাদের এই সংকটকালে সবচেয়ে বড় শক্তি শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষক সমাজের পারস্পরিক ভালোবাসা, সহানুভূতি ও মানবিকতা। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে কাউন্সেলিং দিচ্ছেন, প্রয়োজনে একান্ত আলাপ করছেন।’
গত ২১ জুলাই দুপুর সোয়া ১টার দিকে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে আছড়ে পড়ে। মুহূর্তেই ঘটনাস্থল মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়। মনে হয় সেখানে যেন কোনো বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে।
ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একজন বিমানের পাইলট, দুজন মাইলস্টোনের শিক্ষিকা, একজন অফিস সহকারী এবং বাকি সবাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির কোমলমতি শিক্ষার্থী। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও কয়েকজন।
নদীবন্দর/জেএস