বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ও গবেষক, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক প্রফেসর এমিরিটাস ড. এম শমশের আলী আর নেই। শনিবার (০২ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
শমশের আলীর বড় ছেলে জেহান আলী তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বাদ জোহর ধানমণ্ডির ৭ নম্বর রোডের বায়তুল আমান মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর আজিমপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির প্রাক্তন সভাপতি শমশের আলী ১৯৩৭ সালের ২১ নভেম্বর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৪ সালে যশোর জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫৬ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে আইএসসি পাশ করেন এবং একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৫৯ সালে শ্রেষ্ঠত্বের সঙ্গে অনার্স এবং ১৯৬০ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে ১৯৬১ সালে ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। ১৯৬৫ সালে আবারও ম্যানচেস্টার থেকে থিওরেটিক্যাল নিউক্লিয়ার ফিজিক্স বিষয়ে দ্বিতীয় পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৬১ সালে পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনে যোগ দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। পিএইচডি সম্পন্ন করে ১৯৬৫ সালে দেশে ফিরে ঢাকায় আণবিক শক্তি কেন্দ্রে সিনিয়র বিজ্ঞানী হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৭০ সালে তিনি আণবিক শক্তি কমিশনের পরিচালক পদে নিযুক্ত হন এবং ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে বিশেষ সাইটেশনের মাধ্যমে সম্মানিত করে অনারারি অধ্যাপক পদ দেয়। ১৯৮২ সালে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করে ২০০৬ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।
১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০২ থেকে ২০১০ পর্যন্ত সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য ছিলেন। এছাড়া ২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
অধ্যাপক শমশের আলী ২০২৫ সালের ২৪ মার্চ বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমিরিটাস পদে দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু করেন।
নদীবন্দর/জেএস