রাজধানীর গুলশানের সাবেক এক সংসদ সদদ্যের ঘটনায় হওয়া মামলায় দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ঘটনার মূলহোতা গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বহিষ্কৃত নেতা আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান রিয়াদ।
রোববার (৩ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ তার খাসকামরায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আসামির দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
শুধু রিয়াদ নয়, এদিন মামলাটিতে রিমান্ডে থাকা অপর তিনজনকেও কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সাত দিনের রিমান্ড শেষে এদিন রিয়াদসহ চারজনকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেছুর রহমান। এরপর তিনি পৃথক আবেদন দাখিল করেন।
রিয়াদ স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি দিতে সম্মত হয়েছেন মর্মে তার জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। রিমান্ডফেরত অপর তিন আসামিকে কারাগারে আটক রাখার জন্য পৃথক আবেদন করেন।
অন্য তিনজন হলেন- মো. ইব্রাহিম হোসেন, সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব। তারা সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতা। ঘটনার পর তাদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৭ জুলাই চার আসামিকে সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। একই সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া আমিনুল ইসলাম অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাকে গাজীপুর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
একই মামলায় গত ২ আগস্ট গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরবকে চার দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া ছয়জনকে আসামি করে গত ২৬ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের স্বামী সিদ্দিক আবু জাফর বাদী হয়ে রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৭ জুলাই সকাল ১০টায় আসামি আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদের নেতৃত্বে কাজী গৌরব অপু গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় যায়। তখন তারা হুমকি-ধমকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে।
টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যায়িত করে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করানোর হুমকি দেয়। টাকা চেয়ে চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে সিদ্দিক আবু জাফর বাধ্য হয়ে নিজের কাছে থাকা নগদ ৫ লাখ টাকা ও ভাইয়ের কাছ থেকে নিয়ে আরও ৫ লাখ টাকা তাদের দেন।
গত ১৯ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে আসামি রিয়াদ ও অপু আবারও বাদীর বাসায় প্রবেশ করে তার ফ্ল্যাটের দরজায় সজোরে ধাক্কা মারে। গুলশান থানা পুলিশকে বিষয়টি মোবাইল ফোনে অবহিত করলে তারা চলে যায়।
পরবর্তীতে ২৬ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টায় রিয়াদের নেতৃত্বে অপরাপর আসামিরা বাদীর বাসার সামনে এসে তাকে খুঁজতে থাকে। তাদের দাবি করা বাকি ৪০ লাখ টাকা না দিলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেবে বলে হুমকি দিতে থাকে। বাসার দারোয়ান মোবাইলে ফোন করে তাকে বিষয়টি জানায়।
এসময় পুলিশকে অবহিত করলে তাৎক্ষণিক গুলশান থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচজনকে হাতেনাতে আটক করে। ওই সময় জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব পালিয়ে যায়। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
নদীবন্দর/জেএস