‘জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হলে সর্বত্র গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন তারেক রহমান। শনিবার (০৯ আগস্ট) দুপুরে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) কাউন্সিল অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের অনেক প্রত্যাশা বিএনপির কাছে। এই প্রত্যাশার খুবই ক্ষুদ্র একটি অংশ… কী সেটি? একটি সিস্টেম তৈরি করা, একটি একাউন্টেবিলিটি বা জবাবদিহিতার ব্যবস্থা তৈরি করা। আমরা যদি একটি সঠিক স্বচ্ছ সিস্টেম ধীরে ধীরে গড়ে তুলতে পারি তাহলে আমরা সবর্ত্র একাউন্টেবিলিটি গড়ে তুলতে পারব। আমরা যদি এখানে (ড্যাব) শুরু করতে পারি, ধীরে ধীরে আমরা আমাদের দলের বিভিন্ন পর্যায়ে শুরু করতে পারব। আমরা যদি দলের বিভিন্ন পর্যায় শুরু করতে পারি, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ইনশাআল্লাহ আমরা সামগ্রিকভাবে দেশের স্থানীয় থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ে আমরা ধীরে ধীরে একাউন্টেবিলিটি শুরু করতে পারি।‘
ইংল্যান্ডে জবাবদিহিতা নিশ্চিত আছে বলে সেখানে জনগণ সেবা পাচ্ছে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘ডিজিটাল ম্যাগাজিনটিতে ডাক্তার সুমন বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেছেন। এরকম সমস্যা বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আছে, এরকম সমস্যা বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় আছে, এরকম সমস্যা বাংলাদেশের যাতায়াত ব্যবস্থায় আছে, এরকম সমস্যা বাংলাদেশের কৃষি ব্যবস্থায় আছে, এরকম সমস্যা বাংলাদেশের বলা যায় প্রত্যেকটি ক্ষেত্র বিরাজমান।
বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, আজকে বাংলাদেশে ৫০ বছরেরও বেশি সময় হয়েছে.. আমরা হাঁটি হাঁটি করেও বারে বারে বাধাগ্রস্ত হয়েছি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে চালু করতে। আনফরচুনেটলি আমাকে বহু বছর প্রবাস জীবনে কাটাতে হয়েছে… কাটাতে হচ্ছে। একটি অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে যেহেতু এই দেশে একটি একাউন্টেবিলিটি আছে সেজন্য একজন রোগী যখন জিপির কাছে অথবা হসপিটালে যাচ্ছে সে মিনিমাম একটি সার্ভিস পাচ্ছে। অর্থাৎ শুধু একজন রোগী হিসেবে নয়, যেকোন জায়গায় যেকোন মানুষ যখন যাচ্ছে তার যেটি প্রাপ্য… সেই প্রাপ্য সার্ভিসটা সে পাচ্ছে। আমি অন্তত ইউকের ক্ষেত্রে বা ইংল্যান্ড আমি দেখেছি। কেনো সে পাচ্ছে? কারণ এই এইখানে এই সমাজব্যবস্থায় এই রাষ্ট্রব্যবস্থায় বহু বছরের প্রচেষ্টায় তারা একটি একাউন্টেবিলিটি গড়ে তুলেছে। কিন্তু বাংলাদেশে সেটা গড়ে উঠেনি।
কাকরাই্লের উইলন্স লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গনে বিএনপির চিকিৎসক সংগঠন ‘ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাব’ এর জাতীয় কাউন্সিল-২০২৫ হয়। এই কাউন্সিলে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। কাউন্সিল অধিবেশনের পর বেলা ১টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এই নির্বাচনে অধ্যাপক একেএম আজিজুল হকের নেতৃত্বে ‘আজিজ-শাকুর’ ও অধ্যাপক হারুন আল রশীদের নেতৃত্বে ‘হারুন-শাকিল’ এই দুইটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
‘৩১ দফা বাস্তবায়নে সহযোহিতা চাই’
তারেক বলেন, ‘আজকে রিফর্ম নিয়ে কথা-বার্তা, আলোচনা হচ্ছে। আপনাদের প্রত্যেকের মনে আছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এই রিফর্মগুলো এই যে যত রিফর্ম নিয়ে কথা হচ্ছে তার ৯৯ ভাগ রিফর্ম এই প্রস্তাবনাগুলো জাতির সামনে আজকে থেকে প্রায় আড়াই বছর আগে বিএনপি জাতির সামনে উপস্থাপন করেছিল… সেই কথাগুলোই বিভিন্নভাবে আজকে সরকার গঠিত রিফর্ম কমিশন আলাপ করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে। বিএনপি এবং বিএনপির সাথে যেইসব সমনা রাজনৈতিক দলগুলো যাদেরকে নিয়ে বিএনপি রাজপথে আন্দোলনে ছিল… যাদেরকে নিয়ে বিএনপি চেষ্টা করেছে স্বৈরাচারকে হটাতে, জনগণের বুক ভরে শ্বাস নেওয়ার একটি পরিবেশ তৈরি করতে সেই রাজনৈতিক দলগুলোকে সাথে নিয়ে বিএনপি ৩১ দফা বা রিফর্ম দিয়েছিল জাতির সামনে।
বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, আজকে আমার একটি চাওয়া আছে সেই চাওয়াটি হচ্ছে আমাদেরকে যদি স্বাস্থ্য খাতসহ ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে হয় তাহলে ইনশআল্লাহ জনগণের সমর্থন নিয়ে আমরা সরকার গঠনে সক্ষম হলে আমাদের আপনাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন এই ৩১ দফার বাস্তবায়ন এবং সেই সাথে অবশ্যই ৩১ দফার ভিতরে যে চিকিৎসা সংক্রান্ত যেই দফাটি আছে সেটিকে বাস্তবায়ন করার জন্য।কারণ শুধুমাত্র সরকার, শুধুমাত্র আমাদের দলের সংসদ সদস্য অথবা শুধুমাত্র আমাদের নেতৃবৃন্দের দ্বারা সম্ভব নয় ৩১ দফা বাস্তবায়ন করা। আমাদেরকে এটি বাস্তবায়ন করতে হলে অবশ্যই প্রত্যেকটি মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন।
তারেক বলেন, দেশটি আমাদের সকলের। কাজেই দেশটিকে গড়তে হলে আমাদের সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। প্রত্যেককে একটু করে কন্ট্রিবিউট করলেই আমরা অনেক দূর এগুতে পারব।
‘বেটার কিছু জনগণ চায়’
তারেক রহমান বলেন, ‘এই মুহুর্তে সমগ্র বাংলাদেশে কিন্তু একটি পরিবর্তন প্রত্যাশিত। প্রত্যেকটি মানুষ, সমাজের যেকোন মানুষ একটি পরিবর্তন যাচ্ছে, একটি ভালো পরিবর্তন চাইছে। গত বছর আগস্টের পাঁচ তারিখ মাত্র এক বছর হয়েছে… এক বছর আগেই বহুল প্রত্যাশিত একটি পরিবর্তন হয়েছে বাংলাদেশে।পাঁচ তারিখে সমগ্র জাতি সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ এই যে শ্বাস নিতে পেরেছে তারপরে কিন্তু মানুষ চায় সামনের দিনগুলো যাতে আরও ভালো চায়। বিএনপির কাছে তাদের প্রত্যাশা তুলে ধরেন তারা মনে করেন যে বিএনপি অন্তত উদ্যোগ গ্রহণ করবে আগামী দিনে যাতে আগামী দিনে যেন যেহেতু বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সবচাইতে বেশি সম্ভাবনা দেশ পরিচালনা করার একটি নির্বাচনের মাধ্যমে অবশ্য সেজন্য বিএনপির কাছে প্রত্যাশা করে বেটার কিছু ভালো, কিছু চেঞ্জ তারা দেখতে চায়। সেই পরিবর্তন আনার শুরুটা আমাদেরকে করতে হবে।
নদীবন্দর/জেএস