উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত যমুনা সেতু দিয়ে আর ট্রেন চলবে না। যমুনা নদীর ওপর নতুন করে নির্মিত পৃথক রেলসেতু চালু হয়ে গেছে। ফলে পুরনো যমুনা সেতুতে থাকা রেললাইন এখন উঠিয়ে ফেলা হচ্ছে।
রেললাইন অপসারণের পর সেই জায়গায় সড়ক সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে সেতু বিভাগ। সেতুর মাঝ বরাবর যে অংশে রেল চলত, তা এখন সড়কে রূপান্তরের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এতে করে প্রায় ১১ ফুট জায়গা বাড়বে। এ জায়গা যান চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন— এতে ঈদসহ বিভিন্ন সময়ে যমুনা সেতুতে যে যানজট হয়, তা অনেকটাই কমে আসবে।
সেতু বিভাগ জানিয়েছে, রেললাইন অপসারণের পর বাড়তি জায়গাকে পূর্ণাঙ্গ সড়কে পরিণত করতে কিছু কারিগরি কাজ করতে হবে। এজন্য বাজেটও প্রয়োজন হবে। অন্তর্বর্তী সরকার এই প্রকল্পে সম্মতি দিয়েছে। এখন সড়ক সম্প্রসারণের নকশা তৈরি এবং সম্ভাব্য ব্যয় নির্ধারণের কাজ চলছে। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে বিশেষজ্ঞ দল নিয়োগ করা হয়েছে।
সেতু বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ ফেরদৌস বলেন, আমরা আশা করছি, আগামী ছয় মাসের মধ্যেই কাজ শুরু করতে পারব। তবে এর আগে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে নকশা ও কারিগরি মতামত পেতে হবে। এরপর চূড়ান্তভাবে নির্মাণকাজে এগোনো যাবে।
উল্লেখ্য, যমুনা নদীর ওপর নতুন যমুনা রেলসেতু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে চালু করা হয়। এরপর থেকেই পুরনো যমুনা সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
১৯৯৮ সালে চালু হওয়া যমুনা সেতু মূলত একটি সড়ক সেতু হিসেবে নির্মাণ করা হয়েছিল। তখন এর নকশায় রেললাইনের ব্যবস্থা ছিল না। পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে যমুনা সেতুর একপাশে রেলপথ স্থাপন করা হয়। ফলে সেতুর সড়কপথ সংকুচিত হয়ে পড়ে এবং যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
২০০৬ সালে সেতুর গায়ে ফাটল দেখা দিলে, ট্রেনের গতি সীমিত করে দেওয়া হয়। ভারী মালবাহী ট্রেন চলাচলও তখন থেকে বন্ধ রাখা হয়।
পরে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ সহজ করতে ২০১৬ সালে যমুনা নদীর ওপর নতুন পৃথক রেলসেতু নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। এখন সেই সেতু চালু হওয়ায় পুরনো সেতুতে থাকা রেললাইন আর দরকার নেই।
সেতু বিভাগ মনে করছে, সেতুর মাঝের ওই ১১ ফুট জায়গা সড়ক হিসেবে ব্যবহার করা গেলে যান চলাচলের চাপ অনেকটাই সামাল দেওয়া যাবে। ফলে যাত্রীদের দীর্ঘ যানজটে পড়ার কষ্টও কমবে।
নদীবন্দর/ইপিটি