স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক, প্রাবন্ধিক এবং প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী যতীন সরকার মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বেলা পৌনে ৩টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাকিউর রহমান গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গত ৮ আগস্ট যতীন সরকার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। পাঁচ দিন সেখানে আইসিইউতে তিনি চিকিৎসা নেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, যতীন সরকার দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। আগে থেকেই কিডনি রোগে আক্রান্ত ছিলেন। সেই সাথে নিউমোনিয়ায়ও আক্রান্ত হন।
যতীন সরকার দুই মেয়াদে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ছিলেন। শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ উদীচীর ময়মনসিংহ কার্যালয়ে নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
যতীন সরকার ১৯৩৬ সালের ১৮ আগস্ট নেত্রকোনার কেন্দুয়ার চন্দপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক এ শিক্ষক সুদীর্ঘকাল ধরে মননশীল সাহিত্যচর্চা, বাম রাজনীতি এবং প্রগতিশীল আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
৪২ বছরের বেশি সময় শিক্ষকতা পেশায় থেকে ২০০২ সালে অবসর নেওয়ার পর যতীন সরকার স্ত্রী কানন সরকারকে নিয়ে শেকড়ের টানে চলে যান নিজ জেলা নেত্রকোনায়।
লেখক হিসেবে যতীন সরকার ২০১০ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার, ২০০৭ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ২০০৫ সালে প্রথম আলো বর্ষসেরা গ্রন্থ পুরস্কার, ড. এনামুল হক স্বর্ণপদক, খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার, মনিরুদ্দীন ইউসুফ সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা লাভ করেন। তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে ‘সাহিত্যের কাছে প্রত্যাশা’, ‘পাকিস্তানের জন্ম মৃত্যু-দর্শন’, ‘বাঙালির সমাজতান্ত্রিক ঐতিহ্য’, ‘প্রাকৃতজনের জীবনদর্শন’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
নদীবন্দর/এএস