1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
‘বিতর্কিত’ ওসির বিদায়ে কিশোর গ্যাং-মাদক কারবারিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ! - Nadibandar.com
সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:১৯ পূর্বাহ্ন
নদীবন্দর, ঢাকা
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫
  • ১ বার পঠিত

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার আলোচিত ও বিতর্কিত ওসি আলী ইফতেখার হাসানকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। কিশোর গ্যাং, মাদক কারবারিসহ অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে তার বদলির দাবি জানিয়ে আসছিল। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২৪ আগস্ট) ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত অফিস আদেশের মাধ্যমে তাকে বদলি করা হয়।

‎এদিকে ওসির বদলির ঘটনায় মোহাম্মদপুর এলাকাজুড়ে মাদক কারবারি, কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারীদের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ দেখা দিয়েছে। আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা ওসির বদলির কথা শুনে ইতোমধ্যে অনেকেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।

অভিযোগ রয়েছে, ওসি আলী ইফতেখার হাসানের সঙ্গে আঁতাতের কারণে জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি বুনিয়া সোহেল, চুয়া সেলিম, পিচ্চি রাজারা নির্দ্বিধায় ব্যবসা করেছেন এতদিন। তারা কোটি কোটি টাকার মাদক বাণিজ্য করলেও ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

‎মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা সুমন জানান, মোহাম্মদপুর থানায় কেউ জিডি, অভিযোগ কিংবা মামলা করতে এলে তাদের সেবা না দিয়ে উল্টো হেনস্তা করা হতো। এছাড়া কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ ছিল বিদায়ী ওসির। পাশাপাশি মোহাম্মদপুর এলাকার কিশোর গ্যাং, চাঁদাবাজ, মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গোপনে সম্পর্ক রাখতেন ওসি। তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি মাদক মামলায় ১০ লাখ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠেছে। সে ঘটনায় তার বিরুদ্ধে পুলিশ হেড কোয়ার্টার বিভাগীয় তদন্তও করেছে।

‎আরেক বাসিন্দা তাসির আলম বলেন, আমরা মোহাম্মদপুর থানার বিদায়ী ওসির কাছে আইনি কোনো সহায়তা চাইতে গেলেই বিভিন্নভাবে হেনস্তার শিকার হতাম। তিনি সব সময় ছিনতাইকারী, মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীদের গোপনে আশ্রয় দিতেন। মাদক মামলার ১০ লাখ টাকা গায়েব করা নিয়ে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে তিনি জেনেভা ক্যাম্পের মাদক কারবারি, মোহাম্মদপুরের ভয়ংকর কিশোর গ্যাং গ্রুপ কবজি কাটা আনোয়ারের বাহিনী দিয়ে নিজের পক্ষে মানববন্ধন করান। এছাড়াও তিনি গোপনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করে এলাকায় তাদের পুনর্বাসন করতেন। আবার এমন ঘটনাও ঘটেছে, পুলিশ বৈষম্যবিরোধী মামলার আসামি আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতার করতে যাওয়ার পর ওসির নির্দেশে আসামিকে ছেড়ে দিয়ে আসতে বাধ্য হতো। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় থাকা সত্ত্বেও কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ‎

‎ওসির বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

গত ৭ মে রাতে জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন নামে এক যুবককে ১০ লাখ টাকার হেরোইনসহ আটক করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। তাকে আটকের পর মোহাম্মদপুর থানায় রাত ১২টা ৪০ মিনিটে একটি এফআইআর লেখা হয়। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির ইশারায় তাকে পুরাতন এক মামলায় গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। তার থেকে উদ্ধার হওয়া মাদকদ্রব্য হেরোইন আদালতে জমা দেওয়া হয়নি।

‎যুবককে আটকের পর সেখানে তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ সালের ৩৬ (১) ধারার ৮ (গ) উপধারায় একটি মামলা লেখা হয়। সে মামলায় তার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা বাজারমূল্যে ১০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার দেখানো হয়। মোহাম্মদপুর থানায় প্রস্তুত করা এফআইআর অনুযায়ী সে মামলাটি নম্বর দেওয়া হয় ২৪/৪৪৩। কিন্তু এ মামলাটি আর রুজু না করে ওই যুবককে পুরনো একটি মামলায় আদালতে পাঠানো হয়।

এ ঘটনার সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর ২৮ জুলাই জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি ও স্থানীয় কিশোর গ্যাং চক্রের সদস্যদের দিয়ে মানববন্ধন করান ওসি। এছাড়াও, গত ১৫ আগস্ট মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে প্রায় এক কোটি ১৫ লাখ টাকা, টাকা গণনার মেশিন, ১৩টি তাজা ককটেল বোমা, ২৫টি আধা প্রস্তুত ককটেল, ৪০০ গ্রাম গান পাউডার ও দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র উদ্ধার করে যৌথ বাহিনী। উদ্ধার করা এসব টাকা, দেশীয় অস্ত্র, ককটেল ও গানপাউডারগুলো পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। টাকা ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বুনিয়া সোহেল ও তার গ্রুপের সদস্যদের আসামি করা হলেও ককটেল উদ্ধারের ঘটনায় শীর্ষ এই মাদক কারবারি ও তার গ্রুপের সদস্যদের আসামি না করে বিস্ফোরক মামলায় এক নিরপরাধ ব্যবসায়ীসহ শীর্ষ মাদক কারবারিদের আসামি করে মামলা করা হয়।

‎অভিযোগ রয়েছে, বুনিয়া সোহেলের আস্তানা থেকে উদ্ধার হওয়া এসব বিস্ফোরক সরঞ্জামাদির মামলায় শীর্ষ এই মাদক কারবারির নামে মামলা না দিয়ে তাকে বাঁচিয়ে দেয় মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।

‎এছাড়াও ১২ মার্চ মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকার বি ব্লকের ৭ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের অন্যতম সহযোগী ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ৫ মামলার আসামিকে গ্রেফতারের পর ওসি ইফতেখারের নির্দেশে হাতকড়া পরানোর পরও তা খুলে আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

নদীবন্দর/ইপিটি

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com