স্থানীয়দের সঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে শতাধিক আহত হয়েছেন। উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি দেখা দেওয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। আগামীকাল সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে।
রোববার (৩১ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২নং গেট এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর এই সিদ্ধান্ত নেয় উপজেলা প্রশাসন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন হাটহাজারী উপজেলার হাটহাজারী পৌর এলাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ১০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে রোববার (৩১ আগস্ট) বিকেল ৩টা থেকে ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। এ সময় কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ, সমাবেশ, অস্ত্র বহন, পাঁচজনের বেশি লোকের সমাবেশ এবং যেকোনো ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জননিরাপত্তা বজায় রাখতে এবং যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে লিখেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাত থেকেই তৎপর সরকার। গ্রামবাসীর বাধায় কয়েক দফা চেষ্টা করেও তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে পৌঁছাতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরবর্তীতে ফোর্স পৌঁছেছে।
তিনি লিখেন- পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে কড়া নির্দেশনা রয়েছে। ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। চবি ছাত্রনেতাদের সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে এখনো সংঘাত চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করুন। সন্ত্রাসীদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
শনিবার (৩০ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ২ নম্বর গেটের কাছে শাহাবুদ্দীন ভবন নামের একটি বাসায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থী রাত সোয়া ১১টায় তার ফ্ল্যাট বাসায় প্রবেশ করতে চাইলে তাকে মারধর করেন বাসার দারোয়ান। আশেপাশের শিক্ষার্থীদের দেখে দারোয়ান পালিয়ে যান। এসময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে স্থানীয়রা। এতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ ঘটনার জের ধরে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় স্থানীয়রা।
রোববার (৩১ আগস্ট) সকালে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা ফের মুখোমুখি অবস্থানে আসে। এতে আহত হন প্রায় ২০ জনের মতো শিক্ষার্থী। এ সময় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন উপস্থিত হয়ে সমাধানের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করলে তিনি আহত হন।
পরে কয়েক ঘণ্টা ধরে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করতে বাধ্য হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব পরীক্ষা স্থগিত করেছে।
নদীবন্দর/এএস