অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে সোনার দাম। বিশ্ববাজারে ৩ হাজার ৫০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে প্রতি আউন্স সোনার দাম।
জানা গেছে, মার্কিন ডলার দুর্বল হয়ে পড়ার পাশাপাশি চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমাতে পারে—এমন আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা নতুন করে সোনা কেনার দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। এর ফলেই এমন লাফ দেখা গেছে সোনার দামে। খবর রয়টার্সের।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববাজারে ৩ হাজার ৫০৮ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলারে উঠেছে প্রতি আউন্স সোনার দাম। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৪ লাখ ২১ হাজার ২০ টাকা (১ ডলার সমান ১২০ টাকা ধরে)। এ হিসাবে বিশ্ববাজারে প্রতি ভরি সোনার দাম পৌঁছেছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ২৬০ টাকায়।
হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৩০ শতাংশের বেশি বেড়েছে সোনার দাম; যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ।
ক্যাপিটাল ডটকমের আর্থিক বাজার বিশ্লেষক কাইল রড্ডা বলেন, দুর্বল অর্থনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত ও যুক্তরাষ্ট্রের সুদহার কমানোর সম্ভাবনা সোনাসহ মূল্যবান ধাতুর বাজার চাঙা করে তুলছে। তার ভাষায়, আরেকটি কারণ হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ, তথা ফেডের স্বাধীনতায় দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে ডলারভিত্তিক সম্পদে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে।
মাসের পর মাস ধরে ফেড ও এর চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের সমালোচনা করছেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের মূল অভিযোগ, পাওয়েল সুদহার কমাচ্ছেন না। সম্প্রতি তিনি আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়াশিংটন সদর দপ্তরের ব্যয়বহুল সংস্কারকাজ নিয়েও পাওয়েলের সমালোচনা করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট সোমবার রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ফেড স্বাধীন প্রতিষ্ঠান ছিল এবং থাকা উচিতও। কিন্তু ফেড অনেক ভুল করেছে। পাশাপাশি তিনি ট্রাম্পের পক্ষ নিয়ে দাবি করেন, বন্ধকির বিষয় নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগে ফেড গভর্নর লিসা কুককে বরখাস্ত করার অধিকার প্রেসিডেন্টের রয়েছে।
সিএমই ফেডওয়াচ টুল অনুযায়ী, ব্যবসায়ীরা এখন ধরে নিচ্ছেন, ১৭ সেপ্টেম্বর ফেডের এক-চতুর্থাংশ পয়েন্ট সুদহার কমানোর সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ।
সুদহার কমানোর সম্ভাবনা ও ফেডের স্বাধীনতা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের দুশ্চিন্তার কারণে বিরাট চাপের মুখে পড়েছে মার্কিন ডলার। বর্তমানে প্রতিদ্বন্দ্বী মুদ্রাগুলোর বিপরীতে ডলারের দাম দেড় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানের কাছাকাছি। এতে বিনিয়োগকারীদের কাছে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে ডলার।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, সোনায় বিনিয়োগ করে সুদ পাওয়া যায় না ঠিক, কিন্তু ফেডের সুদের হার কম থাকলে সোনার মতো সুদবিহীন সম্পদ বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে; অর্থাৎ ফেডের সুদহার কমলে সোনার দাম আরও বাড়তে পারে।
নদীবন্দর/এএস