এয়ার টিকিটের অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধি ও সিন্ডিকেট ১৩টি ট্রাভেল এজেন্সির নিবন্ধন বাতিল করেছে মন্ত্রণালয়। এই এজেন্সিগুলো থেকে টিকেট কেনা ও তাদের সঙ্গে কোনো লেনদেন না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হয়।
ট্রাভেল এজেন্সিগুলো হলো- কাজী এয়ার ইন্টারন্যাশনাল (প্রা.) লিমিটেড, সিটিকম ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল এজেন্সি (প্রা.) লি., আরবিসি ইন্টারন্যাশনাল, মেঘা ইন্টারন্যাশনাল এয়ার সার্ভিস, মাদার লাভ এয়ার সার্ভিস, জে এস ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরস, হাসেম এয়ার ইন্টারন্যাশনাল, ফোর ট্রিপ লিমিটেড, কিং এয়ার এভিয়েশন, বিপ্লব ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল এজেন্ট, সাদিয়া ট্রাভেলস, আত-তাইয়ারা ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনাল ও এন এম এস এস ইন্টারন্যাশনালসহ মোট ১৩টি ট্রাভেল এজেন্সি।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ও নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ এ কে এম মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত পৃথক আদেশে এই ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর নিবন্ধন বাতিল করা হয়।
তাতে বলা হয়েছে, আকাশপথের যাত্রী সাধারণের স্বার্থ সংরক্ষণার্থে সরকার কর্তৃক বারবার সতর্কবার্তা প্রেরণের পরেও যেসব ট্রাভেল এজেন্সি, জিডিএস, জিএসএ বা এয়ারলাইন্স সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবে, তাদের বিষয়ে সরকার কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ট্রাভেল এজেন্সিগুলো থেকে কোনো প্রকার এয়ার টিকিট ক্রয়-বিক্রয়সহ ব্যবসায়িক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সর্বসাধারণকে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।
মন্ত্রণালয় জানায়, এয়ার টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিতকরণ এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে ১৩টি ট্রাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। তারা গ্রুপ বুকিংয়ের নামে অনির্দিষ্টকালের জন্য চাহিদাসম্পন্ন রুটের এয়ার টিকিট ব্লক করে রাখা এবং হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপসহ সাব-এজেন্টের মাধ্যমে উচ্চ মূল্যে টিকিট বিক্রয়ের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়। এসব ট্রাভেল এজেন্সি বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অস্বাভাবিক দামে অতিরিক্ত মুনাফার উদ্দেশে টিকিটের মজুতদারি, কালোবাজারি ও প্রতারণামূলক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হয়েছিল।
বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ এর ৯ ধারার বিধান মতে ট্রাভেল এজেন্সির নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এবং ট্রাভেল এজেন্সিগুলোকে আত্মপক্ষ সমর্থনে জবাব দাখিলসহ শুনানির সুযোগ প্রদান করে।
শুনানিতে দুটি ট্রাভেল এজেন্সি হাজির হয়ে কাগজপত্র দাখিল করলেও অন্য ১১টি ট্রাভেল এজেন্সি আত্মপক্ষ সমর্থনে শুনানিতে হাজির হয়নি এবং কোনো প্রকার চাহিত তথ্য দেয়নি, যা বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০২২ এর বিধি ১০ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
উপস্থিত দুটি ট্রাভেল এজেন্সির দাখিলকৃত কাগজপত্র ও সাক্ষ্য পর্যালোচনায় তাদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয় প্রমাণিত হয়েছে।
নদীবন্দর/জেএস