আওয়ামী সরকারের আমলে স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির মূলহোতা হিসেবে পরিচিত মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে রাজধানীর গুলশান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানানো হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা-উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, মিঠুর বিরুদ্ধে দুদকে মামলা রয়েছে। দুদকের চাহিদাপত্র সূত্রে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে তাকে গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজই তাকে দুদকে হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে, বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্যখাতে যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী আলোচিত ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুর বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলার পর দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আকতার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, স্বাস্থ্য খাতে সিন্ডিকেট করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারে জড়িত আলোচিত ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম ওরফে মিঠুর বিরুদ্ধে ৭৫ কোটি টাকার জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা অনুমোদন করেছে কমিশন। মোতাজ্জেরুর ইসলাম মিঠু লেক্সিকোন মার্চেন্ডাইজ ও টেকনোক্রেটের মালিক।
তিনি আরও বলেন, মিঠু বিভিন্ন সময়ে জমি ক্রয়, লিজ, প্লট ও ফ্ল্যাট কেনা, বাড়ি নির্মাণ, শেয়ার ও কোম্পানিতে বিনিয়োগ, গাড়ি ক্রয়, ব্যাংক হিসাবে অর্থ, স্বর্ণালংকার, আসবাব ও ইলেকট্রনিকসামগ্রী মিলিয়ে অন্তত ৭৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকার বেশি সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে স্থাবর সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ অন্তত ৫৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এ ছাড়া তার নামে পারিবারিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ পারিবারিক ব্যয়সহ তার মোট সম্পদ ও ব্যয়ের হিসাব দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৪৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
দুদকের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ব্যবসা, বাড়ি ও কৃষিজমি থেকে আয়, বেতন-ভাতা, ফার্মের অংশ, ব্যাংক সুদ, নিরাপত্তা জামানতের সুদ এবং বৈদেশিক রেমিট্যান্স মিলিয়ে মোতাজ্জেরুলের বৈধ আয় পাওয়া গেছে প্রায় ৭১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অনুসন্ধানে দেখা যায়, তিনি জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে অবৈধ সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার বেশি।
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার প্রায় পুরো শাসনামলজুড়ে স্বাস্থ্যখাতের মাফিয়া ছিলেন মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু।
নদীবন্দর/জেএস