২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনের আগে এম.ফিল প্রোগ্রামে ভর্তি যথাযথ প্রক্রিয়ায় না হওয়ায় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর ভর্তি বাতিল হচ্ছে। সিন্ডিকেট ইতোমধ্যে তার ভর্তি সাময়িকভাবে বাতিল করেছে। ফলে বৈধ ছাত্রত্ব না থাকার কারণে ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে গোলাম রাব্বানীর প্রার্থীতাও অবৈধ ছিল। সেই প্রেক্ষিতে জিএস নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টিকে অবৈধ ঘোষণার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
জিএস পদপ্রার্থী রাশেদ খানের অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটি এই সুপারিশ করেছে। গোলাম রাব্বানীর জিএস পদ বাতিল হলে ওই নির্বাচনে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রাশেদ খানকে ডাকসুর জিএস হিসেবে ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
এদিকে, গোলাম রাব্বানীর ভর্তি বাতিলের খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
তিনি বলেন, দীর্ঘসময় পর হলেও আমি ন্যায়বিচার পেতে যাচ্ছি। গোলাম রাব্বানী শিক্ষার্থীদের ভোটে জিএস নির্বাচিত হয়নি। শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগকে পছন্দ করতেন না। সেই নির্বাচনে আমাদের প্যানেল ১১টি পদে জয়ী হলেও মাত্র দুই পদে আমাদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল।
রাশেদ আরও বলেন, দীর্ঘ সময় পর হলেও আমি ন্যায়বিচার পেতে যাচ্ছি। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই, তারা গুরুত্বের সঙ্গে আমার অভিযোগ বিবেচনা করেছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে কিছু প্রার্থী বা প্যানেলের পক্ষ থেকে ভোটদান, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেওয়া, ভোট কারচুপি, কৃত্রিম লাইন সৃষ্টি, ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপারে অবৈধভাবে সিল মারা, ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, অবৈধ উপায়ে ভর্তি হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণসহ নানা ধরনের অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। তবে এসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য অধিকতর তদন্ত প্রয়োজন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় ডাকসুর ওই নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ফল অনুযায়ী, ভিপি পদে বিজয়ী হন নুরুল হক নুর। তিনি পেয়েছিলেন ১১ হাজার ৬২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ) তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, যিনি পেয়েছিলেন ৯ হাজার ১২৯ ভোট।
এদিকে, ১০ হাজার ৪৮৪ ভোট পেয়েছেন দাবি করে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় ছাত্রলীগের গোলাম রাব্বানীকে। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন মো. রাশেদ খান, যিনি পেয়েছিলেন ৬ হাজার ৬৩ ভোট।
গোলাম রাব্বানীর জিএস নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টিকে অবৈধ ঘোষণার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। সিন্ডিকেটে তাকে অবৈধ ঘোষণা করা হলে নির্বাচনের ছয় বছর পর জিএস হতে পারেন রাশেদ খান। তিনি এখন ন্যায়বিচারের অপেক্ষায়।
নদীবন্দর/জেএস