আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংঘটিত গুমের দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। শুনানি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ অভিযোগপত্র জমা দেয় প্রসিকিউশন। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগটি গ্রহণ করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
প্রসিকিউশন সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে বিরোধী মতের লোকজনকে গুম করে র্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলের গোপন স্থানে বন্দি রেখে নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা করা হয়। ওই মামলায় শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়।
এ ছাড়া ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে আন্দোলন ঘিরে রাজধানীর রামপুরায় ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক মামলায় বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধেও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।
গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতা হারায় আওয়ামী লীগ (দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ)। সেদিনই শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। তিন দিন পর ৮ আগস্ট দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
শান্তিতে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর শেখ হাসিনাসহ কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচার শুরু করে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গঠিত যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালেই তাদের বিচার হচ্ছে।
এরই মধ্যে সরকার আইন সংশোধন করে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটির সব রাজনৈতিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনও দলটির নিবন্ধন স্থগিত করেছে।
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন, অনেকে আত্মগোপনে আছেন। দলীয় কর্মসূচি এখন প্রায় বন্ধ।
নদীবন্দর/জেএস