গাজা উপত্যকায় আটক থাকা ইসরায়েলের জীবিত সব জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। সোমবার (স্থানীয় সময় সকাল ৮টার কিছু পর) প্রথম দফায় ৭ জন জিম্মিকে আন্তর্জাতিক রেডক্রসের হাতে তুলে দিয়েছে তারা। এর কয়েকঘণ্টা পরই স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে বাকি ১৩ জনকেও রেডক্রসের কাছে হস্তান্তর করে হামাস।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, মুক্তিপ্রাপ্ত এই ১৩ জিম্মি হলেন— এলকানা বোহবোট (৩৬), রম ব্রাস্লাভস্কি (২১), নিমরোদ কোহেন (২০), এরিয়েল কুনিও (২৮), ডেভিড কুনিও (৩৫), এভিয়াটার ডেভিড (২৪), ম্যাক্সিম হারকিন (৩৭), আইটান হর্ন (৩৮), সেগেভ কালফন (২৭), বার কুপারশটাইন (২৩), ইউসুফ হাইম ওহানা (২৫) অবিনাতান অর (৩২) এবং ২৫ বছর বয়সী মাতান জাঙ্গাউকারভ। ইতোমধ্যেই সবাই ইসরায়েলে পৌঁছেছেন।
এরআগে প্রথম দফায় মুক্তি দেওয়া ৭ জিম্মিকে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থা রেড ক্রসের জিম্মায় দেয় হামাস। তারপর রেড ক্রস এই জিম্মিদের ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফের কাছে হস্তান্তর করে।
এদিকে হামাস গাজায় আটক থাকা বাকি ২৮ জন বন্দীর মৃতদেহ কখন মুক্তি দেওয়া হবে সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট করে জানায়নি হামাস।
এই মুক্তি প্রক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে গঠিত যুদ্ধবিরতি ও শান্তি পরিকল্পনার অংশ। গত শুক্রবার গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এরপর চতুর্থ দিনে এসে শুরু হয় জিম্মি বিনিময়ের প্রক্রিয়া।
ট্রাম্পের পরিকল্পনার আওতায় গঠিত যুদ্ধবিরতির মূল তিনটি শর্ত— গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধ করা, ইসরায়েলি সেনাদের নির্দিষ্ট সীমানা পর্যন্ত সরিয়ে আনা, এবং জিম্মি ও বন্দি বিনিময়। এই পরিকল্পনা অনুযায়ীই প্রথম ধাপে সাতজন ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি পেয়েছেন।
এদিকে একই সময়ে মিসরের শারম আল-শেখ শহরে শুরু হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন। সম্মেলনে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে পারেন ট্রাম্প। গাজা যুদ্ধ বন্ধে এটি হতে যাচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক পদক্ষেপ।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতরে প্রবেশ করে অতর্কিক হামলা চালায় হামাসের যোদ্ধারা। হামলায় প্রায় ১২০০ জন নিহত হয় এবং প্রায় ২৫০ জন ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় তারা। এরআগে দুই যুদ্ধবিরতিতে প্রায় ২০০ জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস।
এদিকে জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েল তাদের কারাগারে বন্দি থাকা ১ হাজার ৯৫০ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে। এই বন্দিদের মধ্যে ২৫০ জন যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত। এছাড়া মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ২২ জন শিশু রয়েছে বলেও জানা গেছে।
সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল, আলজাজিরা
নদীবন্দর/জেএস