মিরপুর রুপনগরের কেমিক্যাল গোডাউনের আগুন ২৭ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। দ্বিতীয় দফায় বুধবার সকাল ১১ টা ৪০ মিনিট থেকে আগুন নেভানোর কার্যক্রম শুরু হয়। দুপুর ২ টা ৪০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে উদ্ধার অভিযান শেষ করতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।
বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
ক্ষতির বিষয়টি উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের রাজউক অথবা এখানকার ভবন বিশারদ যারা রয়েছেন তারা এটা বলতে পারবেন যে এটা কতটুকু ড্যামেজ হয়েছে। তবে আপাতত দৃষ্টিতে এটা একটা অনেকাংশে ড্যামেজ এবং এখানে যেকোন সার্চ অপারেশন করাটা অবশ্যই ঝুকিপূর্ণ। এই ঝুকিটা এড়ানোর জন্য আমরা প্রটেকশন নিয়ে ধাপে ধাপে কাজ করছি। এ সার্চ অপারেশন চালানোর জন্য আরো সময় লাগবে। আমাদের হয়তো আরো ৩৬ ঘণ্টা থেকে ৭২ ঘণ্টাও অপেক্ষা করা লাগতে পারে।
মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে মিরপুরের শিয়ালবাড়ি এলাকায় ওই ভবনে আগুন লাগে। এটি আলম ট্রেডারস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কেমিক্যাল গোডাউন ছিল। সংশ্লিষ্টরা জানান, ভবনটিতে একটি পোশাক কারখানা ও নিচতলায় কেমিক্যাল গোডাউন ছিল। অগ্নিকাণ্ড দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে ভবনের ভেতরে থাকা বহু শ্রমিক আটকা পড়ে। উদ্ধার কাজ চলাকালে পোড়া লাশ বের করে আনতে দেখা যায় দমকল বাহিনীকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভবনটিতে কেমিক্যাল গোডাউন গড়ে তোলা হলেও সেটি ছিল অবৈধ ও অননুমোদিত। ফলে আগুন দ্রুত ভয়াবহ রূপ নেয় এবং নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয় দমকল কর্মীদের।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক জানান, ধাপে ধাপে এগোনোর মাধ্যমে কেমিক্যালের বিষয়ে জানা যাবে। এই ভবন অনেক অংশে ড্যামেজ। তবে কতটুকু ড্যামেজ তা রাজউকের পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে বলা যাবে। তিনি বলেন, আলম ট্রেডারসের মূল ফটক তালা দেওয়া ছিল। তাই এর ভেতরে অপারেশনের মাধ্যমে জানা যাবে আর কেউ ভেতরে আছে কি না। তবে ধারণা করা হচ্ছে কেউ নেই।
তাজুল ইসলাম বলেন, গতকাল মঙ্গলবার প্রায় ১১টা ৪০ মিনিট থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত কার্যক্রম করছি। গতকালকেই গার্মেন্টস অংশটির আগুনটা নিয়ন্ত্রণ হয়েছে। কেমিক্যালের যে গোডাউন আলম ট্রেডারস নামে পরিচিত, সেই গোডাউনের আগুনটা আমরা আজ ২টা ২০ মিনিটে নিয়ন্ত্রণ ঘোষণা করেছি।
‘যেহেতু এটা একটা কেমিক্যাল গোডাউন এবং এখানে প্রায় ছয়-সাত ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য রয়েছে। যেটার মাত্রা এখনো আমরা যাচাই বাছাই করতে পারিনি। তবে পুরা গোডাউন ভরা। যেই বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য, এটা আমরা ধাপে ধাপে প্রোগ্রেসিভ ওয়েতে এটাকে ড্রেন আউট করছি। পানি দিয়ে ফায়ারফ্লোর ফ্লাট করে এটাকে আমরা ড্রেন আউট করছি ধাপে ধাপে। এটা সময় সাপেক্ষ একটি বিষয়। আমরা সিস্টেমেটিক কাজ করছি।’ বলেন তাজুল।
ক্যামিকেল গোডাউনটি অবৈধ জানিয়ে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক বলেন, সার্ভিসের অবৈধ প্রতিষ্ঠানের যে তালিকা করেছে, সেই তালিকায় শাহআলম ট্রেডার্স নামের ওই রাসায়নিকের গুদামটিও ছিল। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থাকে জানানোর পাশাপাশি তিন বার ওই গুদামে নোটিশও দেওয়া হয়েছিল। ওই গুদামটি অভিযান চালানোর পর্যায়ে ছিল।
নদীবন্দর/ইপিটি