দেশে গণভোটের আগে কোনো কিছু হতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক। তিনি বলেন, জুলাই সনদ আমরা কোনো কাগুজে সনদ হিসেবে দেখতে চাই না। জুলাই সনদকে আমরা আগামী বাংলাদেশের রূপরেখা হিসেবে দেখতে চাই। এজন্য আমরা আট দলের পক্ষ থেকে বলেছি, অনতিবিলম্বে জুলাই সনদকে সরকারি আদেশের মাধ্যমে এর প্রাথমিক আইনি ভিত্তি প্রদান করতে হবে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর পল্টন মোড়ে আয়োজিত আট ইসলামী দলের সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে মামুনুল হক এসব বলেন।
মামুনুল হক বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বেই গণভোটের মাধ্যমে জুলাই মনদকে চূড়ান্ত আইনি ভিত্তি দিতে হবে। এর ব্যত্যয় হয়ে জুলাই বিপ্লবপন্থীরা বরদাস্ত করবে না। আমরা সুস্পষ্ট ঘোষণা দিতে চাই, আমাদের জুলাই যোদ্ধাদের, জুলাই বিপ্লবের শাহাদাত বরণকারী বীর শহীদদের রক্ত মাড়িয়ে জুলাই বিপ্লবের জুলাই সনদ বাস্তবায়ন গণভোট ছাড়া বাংলার মাটিতে আমরা আর কোনো কিছুই হতে দেব না।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের আমির বলেন, আমি জানি না, জাতীয় নির্বাচনের আগে একটি পক্ষ কেন জুলাই সনদ বাস্তবায়ন চাচ্ছে না। গণভোট হলে কার কী সমস্যা? জুলাই সনদের গণভোট ছাড়া জাতীয় নির্বাচন হলে, যদি তপসিল ঘোষণা হয়ে বাস্তবায়িত হয় সেখানে অনেক জটিলতা সৃষ্টি হবে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দ্বিকক্ষ সংসদের উচ্চকক্ষ কীভাবে গঠিত হবে? কীভাবে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নির্বাচনি মেনুফেস্টু (ইশতেহার) তৈরি করবে?
দলগুলো জাতির সামনে তাদের একশ প্রার্থীর তালিকা কীভাবে প্রকাশ করবে? এসব বিষয়ের কোনো সদুত্তর তাদের কাছে নাই। যারা জাতীয় সংসদের আগে জুলাই সনদের গণভোটের বিরোধিতা করছেন আমরা তাদের সমস্যা জানতে চাই। তাদের কাছে কোনো যুক্তি নাই। তারা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ঠেকিয়ে দিয়ে আবার ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়। – বলেন মামুনুল হক।
দেশ আজ দুই ভাগে বিভক্ত মন্তব্য করে মামুনুল হক বলেন, এক ভাগ বাহাত্তরের বাকশালপন্থী, আরেক ভাগ জুলাইয়ের বিপ্লবপন্থী। আজ প্রতিটি রাজনৈতিক পক্ষের কাছে আমার সুস্পষ্ট জিজ্ঞাসা, সবাই যার যার অবস্থান পরিষ্কার করুন। হয় আপনি জুলাইয়ের পক্ষপাতি, আর না হয় বাহাত্তরের বাকশালপন্থী। বাহাত্তরের পরাজিত বাকশালপন্থীরা আগামী ১৩ নভেম্বর লকডাউনের নামে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে। আমি ঘোষণা দিচ্ছি, ১৩ নভেম্বর আমরা কোনো বাকশালপন্থীকে বাংলার রাজপথে নামতে দেব না। রাজপথে তাদের মোকাবেলা করা হবে।
এর আগে দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও ১২টার পরপরই ঢল নামে নেতাকর্মীদের। দেড়টার দিকেই বন্ধ হয়ে যায় পল্টনের সব সড়ক।
সমাবেশে জামায়াত ছাড়াও অন্য দলগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি।
নদীবন্দর/জেএস