জুলাই গণহত্যার জন্য অভিযুক্ত ক্ষমতাচ্যুত ‘আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা তুলে নেওয়া হবে’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি বক্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তার এই বক্তব্যটি মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। অনেকে এই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন। বিএনপির দফতর থেকে পাঠানো বিবৃতিতে সেই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব দাবি করেছেন, তার বক্তব্য গণমাধ্যমে বিকৃতভাবে এসেছে। তিনি বক্তব্যে ওই ইউনিয়নের প্রসঙ্গ এনেছেন এবং সেখানে কোনো হয়রানিমূলক মামলা হলে তা প্রত্যাহারের কথা বলেছেন। কোনো মতেই দেশব্যাপী দায়ের করা মামলার কথা বলা হয়নি। এই বক্তব্যে বিভ্রান্তি না হতে দেশবাসী এবং দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব।
ঠাকুরগাঁও-১ আসনে এবারও ধানের শীষের মনোনয়ন পাওয়া বিএনপি মহাসচিব কয়েক দিন ধরেই নিজ নির্বাচনি এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। এই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা মোহাম্মদপুর শাপলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব। সেই বক্তব্যই ব্যাপক আলোচিত ও সমালোচিত হয়।
বিএনপির দফতর থেকে পাঠানো বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজ ১১ নভেম্বর বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলাধীন সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর শাপলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক মতবিনিময় সভায় দেওয়া আমার একটি বক্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি আমার বক্তব্যে বলেছি যে, আমরা প্রতিশোধের রাজনীতি করতে চাই না। আওয়ামী লীগের মতো হয়রানিমূলক মামলা করতে চাই না। আমি আমার দেওয়া বক্তব্যে আরও বলেছি যে, এই ইউনিয়নে হয়রানিমূলক কোনো মামলা হলে আমরা তুলে নিবো। কিন্তু দেশব্যাপী হয়রানিমূলক মামলা দায়ের কিংবা মামলা তুলে নেওয়ার বিষয়ে আমি কোনো বক্তব্য প্রদান করিনি। দেশের জনগণ ও দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভুল বক্তব্যের বিষয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি।’
এর আগে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খানের পক্ষ থেকে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সেখানেও তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিশোধের রাজনীতি করতে চাই না। আওয়ামী লীগের মতো হয়রানিমূলক মামলা করতে চাই না। এই ইউনিয়নে হয়রানিমূলক কোনো মামলা হলে আমরা তুলে নেবো।’মিডিয়া সেল থেকেও মহাসচিবের বক্তব্য নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ারও আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে মির্জা ফখরুলের বক্তব্য মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অনেকেই শেয়ার দিয়ে এ নিয়ে কঠোর সমালোচনা শুরু করেন। পরে তাৎক্ষণিকভাবে বিএনপি মহাসচিবের বরাত দিয়ে এই ব্যাখ্যা দেওয়া হয় মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে।
প্রসঙ্গত, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সেই বক্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়।
নদীবন্দর/জেএস