1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
আশরাফুলকে হত্যার পর একই ঘরে শারীরিক সম্পর্কে জড়ান শামীমা-জরেজ: র‌্যাব - Nadibandar.com
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:২৮ পূর্বাহ্ন
নদীবন্দর, ঢাকা
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৩ বার পঠিত

রংপুরের ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে হত্যার পর মরদেহ একই ঘরে রেখে রাত কাটানো এবং পরবর্তীতে শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর মতো চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন গ্রেফতার হওয়া শামীমা আক্তার ওরফে কোহিনুর।

এলিট ফোর্স র‌্যাবের কাছে দেওয়া প্রাথমিক জবানবন্দিতে শামীমা জানান, হানি ট্র্যাপে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করে ১০ লাখ টাকা আদায়ের পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই আশরাফুলকে ঢাকায় ডেকে আনা হয়েছিল। আর সেই পরিকল্পনার মূল নায়ক ছিলেন নিহতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু জরেজ।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন।

হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে আশরাফুলের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল বলে শামীমা দাবি করলেও র‌্যাব বলছে, হত্যাকাণ্ড যেভাবে সংঘটিত হয়েছে, তাতে পূর্বশত্রুতা বা অতিরিক্ত ক্ষোভ ছাড়া তা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে তারা নিহতের বন্ধু জরেজের সঙ্গে এখনও কথা বলতে পারেনি। তবে হত্যাকাণ্ডের সময় বাধা দিয়েছিলেন বলে র‌্যাবের কাছে দাবি করে শামীমা।

শামীমা আরও জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের পর মালয়েশিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল জরেজের। এজন্য পাসপোর্টও তৈরি করতে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই জরেজ ও শামীমা গ্রেফতার হন।

র‌্যাব জানায়, এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক থাকা জরেজের প্ররোচনায় শামীমা এক মাস আগে থেকে আশরাফুলের সঙ্গে নিয়মিত অডিও-ভিডিও কলে যোগাযোগ শুরু করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি আশরাফুলকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ঢাকায় আসতে রাজি করান। গত ১১ নভেম্বর জরেজ ও আশরাফুল রংপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। এর পরদিন দুজনে শামীমার সঙ্গে দেখা করে শনির আখড়ার নূরপুর এলাকায় ভাড়া করা বাসায় ওঠেন।

রংপুর থেকে রওনা হওয়ার আগেই জরেজ শামীমাকে জানায় যে, আশরাফুলকে অন্তরঙ্গভাবে নিয়ে তার ভিডিও ধারণ করতে হবে এবং পরে সেই ভিডিও দেখিয়ে তারা তার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা আদায় করবে। সেই মোতাবেক ঢাকার বাসায় নিয়ে শামীমা শরবতের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট মেশান। এরপর শামীমা ও আশরাফুলের অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারণ করে জরেজ।

আশরাফুল অচেতন হলে তার হাত রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে এবং মুখ কসটেপ দিয়ে আটকে দেয় জরেজ। অতিরিক্ত ইয়াবা সেবন করে উত্তেজিত হয়ে অচেতন আশরাফুলকে হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন জরেজ।

জবানবন্দিতে শামীমা দাবি করেন, তিনি জরেজকে হত্যার সময় বাধা দিয়েছিলেন, কিন্তু এতে জরেজ ক্ষিপ্ত হয়ে তাকেও মারধর করেন। অতিরিক্ত আঘাত এবং মুখ কসটেপ দিয়ে আটকানো থাকায় শ্বাস না নিতে পেরে একপর্যায়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান আশরাফুল।

এরপর লাশ একই ঘরে রেখে জরেজ ও শামীমা রাত্রীযাপন করে দুজনে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। পরদিন আশরাফুলের মৃতদেহ গুম করার জন্য স্থানীয় বাজার থেকে চাপাতি ও ড্রাম কিনে আনেন। এরপর সেই চাপাতি দিয়ে আশরাফুলের মরদেহটি ২৬ টুকরো করে ড্রামে ভরেন। পরে একটি অটোরিকশা ডেকে নিয়ে তাতে তোলেন। পথে আরও একটি অটোরিকশা পাল্টান। শেষে লাশ ভর্তি ড্রাম দুটি হাইকোর্টের পানির পাম্প সংলগ্ন প্রধান সড়কের পাশে একটি বড় গাছের নিচে ফেলে তারা দ্রুত হাইকোর্ট এলাকা থেকে একটি অটোরিকশাযোগে সায়েদাবাদ যান।

সেখানে যাওয়ার পর জরেজ শামীমাকে কুমিল্লায় তার নিজ বাড়িতে চলে যেতে বলেন এবং তিনি রংপুর তার নিজের বাড়িতে চলে যাবেন বলে শামীমাকে জানায়।

শামীমা কুমিল্লা তার নিজ বাড়িতে চলে যান। এরপর জরেজের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন শামীমা।

র‌্যাব জানায়, শামীমার দেওয়া তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দড়ি, কসটেপ, চাপাতি ও রক্তমাখা পোশাক শনির আখড়ার নূরপুর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক ফায়েজুল আরেফীন বলেন, শামীমার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ব্লাকমেইল করে টাকা উপার্জন করায় তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল। তবে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে পূর্বশত্রুতা আছে কি না মূল আসামি জরেজকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছে র‌্যাব।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছে নীল রঙের দুটি ড্রামে আশরাফুলের ২৬ টুকরা লাশ পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিক পরিচয় শনাক্ত না হলেও পরে আঙুলের ছাপ নিয়ে তার পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ।

আশরাফুল রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার ১০ বছরের একটি মেয়ে ও ৭ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। আশরাফুলের বাবার নাম মো. আবদুর রশীদ।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আশরাফুলের বোন আনজিরা বেগম বাদী হয়ে শুক্রবার শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

নদীবন্দর/জেএস

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com